• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কালিজিরা ফুলের মধু চাষে বাজিমাত শাহীদুলের


নয়ন দাস, শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ০৮:৩৬ এএম
কালিজিরা ফুলের মধু চাষে বাজিমাত শাহীদুলের
নিজের মৌ খামারে শাহীদুল ইসলাম। ছবি : প্রতিনিধি

কৃষিনির্ভর এলাকা হওয়ায় রবিশস্য মৌসুমে শরীয়তপুরে অধিক পরিমাণে মধু উৎপাদন হয়। এই এলাকার বেকার যুবকরা মধু উৎপাদন করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছেন। এদের মধ্যে অন্যতম একজন মৌ-চাষি শাহীদুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি বাণিজ্যিকভাবে কালিজিরা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরজুড়ে মৌমাছি লালন-পালনসহ অন্যান্য খরচ মিটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন শাহীদুলের মতো চাষিরা, এমনটাই প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলায় কালিজিরা, সরিষা, ধনিয়াসহ বিভিন্ন ফুলের মধু উৎপাদন হয়। এ বছর জেলায় কালিজিরা চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমিতে। রবি মৌসুমের শেষ দিকে কালিজিরা ফুলের মধু সংগ্রহ করেন মৌ-চাষিরা। কালিজিরার মধুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে। দামেও বেশ ভালো হওয়ায়, এই মধু চাষে চাষিরা অধিক পরিমাণে লাভবান হন। গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি মধু আহরণ হবে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের।

মৌ-চাষি শাহীদুল ইসলাম জাজিরা উপজেলার কাইজ্জার চর ও নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামে কালোজিরার মৌ খামার গড়ে তুলেছেন। প্রথমে অল্প কয়েকটি বাক্স দিয়ে শুরু করলেও এ বছর তার খামারে ২০০টি মৌ বাক্স রয়েছে। প্রতিটি বাক্সে ১টি রাণী মৌমাছিসহ লক্ষাধিক কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু আহরণ করে মৌচাকে নিয়ে সংরক্ষণ করে।

মৌ-চাষি শাহীদুল ইসলাম বলেন, “সারা বছর মৌমাছিদের লালন-পালন, কর্মচারীদের বেতনসহ আমার খরচ হয় ৬ লাখ টাকা। এ বছর আমার টার্গেট ১২ লাখ টাকা মূল্যের মধু উৎপাদন করা। মধু উৎপাদনের জন্য আমার ব্যবহৃত উপকরণসমূহ আধুনিক হওয়ায় সম্পূর্ণ খাঁটি মধু উৎপাদন করতে পারি। বাজারে অন্যান্য মধুর তুলনায় কালোজিরা ফুলের মধুর চাহিদা ও মূল্য বেশি হওয়ায় বেশি লাভবান হতে পারব।”

শাহীদুল ইসলাম আরও বলেন, “একসময় বেকার ছিলাম। এখন আমার খামারে ৫ জন কর্মচারী কাজ করে। গত বছর ৪ টন মধু বিক্রি করেছি। এ বছর ৫ থেকে ৬ টন মধু উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।”

শাহীদুল ইসলামের মৌ খামার দেখতে এসেছেন জয় দত্ত। তার ইচ্ছে মধু উৎপাদন করে উপার্জন করার। তিনি বলেন, “পড়াশোনা প্রায় শেষ করেছি। বাবা কৃষক হওয়ায় কৃষি কাজ করতে ভালোই লাগে। আমার ইচ্ছে আছে মৌ চাষ শিখে মৌ চাষ করব।”

জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বীথি রানী বিশ্বাস বলেন, জাজিরাসহ অন্যান্য উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে রবিশস্য উৎপাদন হয়েছে। এই মৌসুমে জেলার মৌ-চাষিরা বিভিন্ন স্থানে উৎসাহ নিয়ে মধু উৎপাদন করেন। নিজেদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি মানবদেহের জন্য উপকারী মধু উৎপাদন করে তারা দেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখতে ভূমিকা রাখেন।

Link copied!