হাসপাতালে যাওয়ার পথে একটি বাঁশের ভাঙা সাঁকো। ওই বাঁশের সাঁকোটি ভ্যান চলাচলের অনুপযোগী। সাঁকোটি হেঁটে পার হওয়ার সময় সাঁকোর ওপরই ওই নারী সন্তান প্রসব করেন।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় শোলমারি ইউনিয়নের বোয়ালমারী বেড়িবাঁধের রৌমারী–খাটিয়ামারী সড়কের সবুজপাড়া স্লুইসগেট সংলগ্ন সাঁকোতে এ ঘটনা ঘটে।
সাঁকোটি বাঁশ ও কাঠের তৈরি। সংস্কার না হওয়ায় কিছু অংশ ভেঙে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
প্রসূতির নাম বিলকিস বেগম। তিনি যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর গ্রামের সাইজউদ্দিনের স্ত্রী। রৌমারী সদর ইউনিয়নের সুতিরপাড় গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল।
বিলকিসের ভাই সাফি উদ্দিন ও ভাবি আমিনা বেগম বলেন, সকালে প্রসব বেদনা উঠলে বিলকিসকে ব্যাটারিচালিত ভ্যানযোগে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন তারা। কিন্তু ভাঙা সাঁকোতে ভ্যান পারাপারের উপায় নেই। হেঁটে পার হওয়াই ঝুঁকি। বাধ্য হয়ে প্রসব বেদনায় কাতর বিলকিসকে হাঁটিয়ে সাঁকো পার হতে থাকেন। সাঁকোর মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছালে প্রসব বেদনায় আরও তীব্র হলে সেখানেই শুয়ে পড়েন বিলকিস। কিছুক্ষণ পরেই একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। পরে মা ও সদ্যোজাতকে নিয়ে তারা বাড়ি ফেরেন। দুজনেই সুস্থ আছেন।
স্থানীয়রা জানান, বোয়ালমারী বেড়িবাঁধের রৌমারী–খাটিয়ামারী সড়কের সবুজপাড়া স্লুইসগেট সংলগ্ন অংশটি ২০১৪ সালের বন্যায় ভেঙে যায়। উপজেলা সদর থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে এই স্থানটি ভেঙে যাওয়ায় তখন থেকে ১৪ গ্রামের মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় সেখানে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। পরে বিভিন্ন স্থানের কাঠ ভেঙে গেলেও সেটি আর সংস্কার করা হয়নি। সাঁকো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন, “সাঁকোর ওপর প্রসূতির সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের একটি দল প্রসূতি মায়ের বাড়ি গিয়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।”
ইউএনও আরও বলেন, ‘ভাঙা ওই সাঁকোর স্থলে স্থায়ী সেতু নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর সেখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হবে।’