কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মো. রাসেল নামের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালককে হত্যার দায়ে দুই যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন চৌদ্দগ্রামের শুভপুর গ্রামের মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে গিয়াসউদ্দিন (২৩) এবং নাঙ্গলকোট উপজেলার গান্দাচী গ্রামের আনা মিয়ার ছেলে অলি উল্লাহ (৩০)।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত গিয়াস উদ্দিন কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও অলি উল্লাহ পলাতক রয়েছেন।
অপরদিকে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় টুংকু মিয়া নামের একজনকে বেকসুর খালাস এবং মামলা চলাকালীন একরামুল হক পাগলা নামের এক আসামি মারা গেলে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মুজিবুর রহমান বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, হত্যার শিকার মো. রাসেল ভাড়ায় অটোরিকশা চালাতেন। ২০১৯ সালের ১৮ জুন দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনসহ মারা যাওয়া অপর আসামি যোগসাজশে রাসেলের অটোরিকশা ভাড়ায় নেন। পরে রাতে আসামি একরামুল হক অটোচালক রাসেলের পরিবারের লোকজনকে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে রাসেলের বাবা জয়নাল আবেদিন ধার করে ৫০ হাজার টাকা একরামুল হক পাগলার বিকাশ নম্বরে পাঠান।
কিন্তু তাতেও মুক্তি না দিয়ে কুমিল্লা নগরীর রাজাপাড়া মোড়ে রাসেলকে ইয়াবা ট্যাবলেট খাওয়ার কথা বলে বিমানবন্দর এলাকায় জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে আসামি অলি উল্লাহ, গিয়াস উদ্দিন ও একরামুল হক পাগলা রাসেলের প্যান্টের বেল্ট খুলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং কাদামাটি দিয়ে ঢেকে মরদেহ গুম করে রাখে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন উর রশিদ, উপপরিদর্শক সুজন কুমার মজুমদার এবং উপপরিদর্শক মিন্টু দত্ত মামলাটি তদন্ত করেন।
তদন্তের শুরুতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামি একরামুল হক পাগলা ও গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে তারা ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত রায় দেন।