পঞ্চগড়ের পৃথক ঘটনায় সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় নারী ও শিশুসহ ১৩ বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে বিজিবির নীলফামারী ৫৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন শুকানী বিওপির টহল দল সীমান্তের ৭৩৯/৪ এস পিলারসংলগ্ন এলাকা থেকে দালালসহ ৯ বাংলাদেশিকে আটক করে বিজিবি।
আটক ৯ জনের মধ্যে ৮ জন দুটি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারের সদস্য।
আটকরা হলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের মদন দাসের ছেলে রমেশ দাস (৩৮) ও তার ভাই সুশীল দাস (৩৯), অধীর দাসের মেয়ে পাতলী রানি দাস (৩৪) ও আরতী দাস (৩৭), সুশীল দাসের মেয়ে সুবর্ণা দাস (১৮), অলিল দাসের ছেলে পরিমল দাস (২৮) এবং পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার গোলাপদীগছ গ্রামের ইসলাম আলীর ছেলে সাইদুল ইসলাম হনু (৪৪)। এ ছাড়া আরও দুই শিশু ছিল। পরে তাঁদের তেঁতুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।
এ সময় তাদের কাছ থেকে স্বর্ণের আংটি, কানের দুল, গলার হার এবং নগদ টাকাসহ চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
এদিকে বুধবার রাতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বড়শশী বিজিবি বিওপির বিপরীতে ভারতের ১৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধীন মহাদেব বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় চারজন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করে।
আটকরা হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের ভল্লী থানার কাউতাঠি গ্রামের নিমাই চন্দ্র বর্মণ (৪২), পীরগঞ্জ উপজেলার থুমানিয়া গ্রামের সনাতন রায় (২৮), পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার কালপীর গ্রামের পরিতোষ রায় (২১) এবং নীলফামারী সদরের ডুবাছড়ি গ্রামের মালিন চন্দ্র রায় (৩৩)।
পরে সকালে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ তাদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাঁদের বোদা থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে বিজিবির নীলফামারী ৫৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আসাদুজ্জামান হাকিম জানান, পৃথক দুটি ঘটনায় ১৩ জনকে উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনকে আটক করেছে বিজিবি এবং ৪ জনকে বিএসএফ আটক করে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে।
পঞ্চগড় তেতুঁলিয়া মডেল থানার ওসি সুজয় কুমার রায় বলেন, “আটকরা অনেকটা ভীত হয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে তাদের কেউ ভয় দেখিয়ে ভারতে যেতে বাধ্যও করেননি বলে আমাদের জানিয়েছেন তারা। আমরা তাদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি। সেই সঙ্গে বিজিবি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। তবে আটক সাইদুলকে আগের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।”