জামালপুরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সরিষাবাড়ী উপজেলা শাখার সম্মেলনে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পোগলদিঘা ডিগ্রি কলেজের মিলনায়তনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে পোগলদিঘা ডিগ্রি কলেজের মিলনায়তনে ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেখানে সম্মেলন চলাকালে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে অধিবেশনটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর হামলাকারীরা ছাত্র ইউনিয়নের যাকে যেখানে পায়, সেখানে মারধর করে। এতে সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হন।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ডেইলি স্টারের জামালপুর প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম নিরব, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের জামালপুর জেলার সভাপতি মাহবুব জামান ও সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক শাহরিয়ার সৈকত। তাদের মধ্যে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম নিরবকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান খন্দকার মাহিন বলেন, “শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পোগলদিঘা কলেজ মাঠে যুব ও ছাত্র ইউনিয়নের কাউন্সিল শুরু হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ ২০-৩০ জন লোক অতর্কিত হামলা চালায়। সেই সময় ডেইলি স্টারের জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম নিরবসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়।”
নিরব বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তিনি জানান, তিনি সম্মেলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। পরিচয় দেওয়ার পরও হামলাকারীরা তাকে মারধর করেন।
কাউন্সিলে অংশ নিয়েছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মেঘ মল্লার বসু। তিনি বলেন, “স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতনের পর অনেক শিক্ষার্থী ছাত্র ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকেছে। এর অংশ হিসেবে উপজেলা ছাত্র ও যুব ইউনিয়নের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের জমায়েত দেখে একদল দুষ্কৃতিকারী অতর্কিত হামলা করে।”
হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি জামালপুর জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহম্মেদ খান বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলনটি খুব সুন্দরভাবে হচ্ছিল। হঠাৎ একদল দুর্বৃত্ত মিলনায়তনে ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় তারা যাকে যেখানে পেয়েছে, এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এতে সাংবাদিকসহ ছাত্র ইউনিয়নের প্রায় ২০ জন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলাটি কারা করেছে, কোন উদ্দেশে করেছে, এখনো বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
জানতে চাইলে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. চাঁন মিয়া বলেন, “ওই সম্মেলনের বিষয়টি আমাদের অবগত করা হয়নি। তারা সেখানে গোপনে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল। হামলার বিষয়টি শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমি হাসপাতালে ওই সাংবাদিককে দেখতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”