টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সমর্থকরা পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেয়েই নৌকার সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা ও মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে ও রাতে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নৌকার অন্তত ১২ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার কস্তুরিপাড়া মাদ্রাসা মার্কেটে ঢুকে ট্রাক প্রতীকের সমর্থক ওই গ্রামের জহুরুল ইসলাম, টুটুল মিয়া, মো. সুমন, খোকাসহ আরও অনেকে নৌকার সমর্থক মিনহাজ সিকদার, শুকুর মামুদ সিকদারকে বেদম মারধর করে। এরপর ওই বাজারেই ব্র্যাক ব্যাংক এজেন্টের ভিতরে গিয়ে জয়নাল আবেদীন সিকদারকে মারধর করে জহুরুল ইসলাম।
অপরদিকে, মহিষজোড়া গ্রামে নির্বাচনের দিন রাতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নৌকার অফিস ভাংচুরের করে তারা। পর দিন ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে মহিষজোড়া গ্রামের আকাশ সিকদার, গোলাম মোস্তফা, বেলায়েত সিকদার, নোমান সিকদার, সেলিম সিকদার, পলু মিয়া, শফিকুল ইসলাম, আব্দুল আলীম, হাসান আলী, আলীম, সিয়াম সিকদারসহ আরও ৫-৭ জনকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। এদের মধ্যে গোলাম মোস্তফাকে ঢাকায় ও বেলায়েত সিকদার, নোমান, সেলিম ও আব্দুল আলীমকে টাঙ্গাইল চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আরও অভিযোগ রয়েছে একই গ্রামের মিন্টু, শফিকুল, তোয়াজ, আলতাফ, মজনু, নজরুল, শামেস, মোতাহার, আক্কাস, আলম, কাদের ও চেকু মণ্ডলসহ আরও অনেকের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। এতে করে মিন্টু গ্রুপের আলমগীর, মিরু মিয়া ও আছরুল আহত হন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রোববার নির্বাচনের দিন কালিহাতীর নাগবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুমের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার থানায় মামলা হয়। সোমবার রাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত দুজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা সবাই লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থক। গ্রেপ্তার হওয়া অনুসারীদের মুক্তির দাবিতে লতিফ সিদ্দিকী মঙ্গলবার দুপুরে কালিহাতী থানার সামনে যান। তিনি গ্রেপ্তার কর্মীদের ছেড়ে দিতে বলেন। পুলিশ তাদের ছেড়ে না দেওয়ায় লতিফ সিদ্দিকী থানার সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। এ সময় তার অনুসারীরা তার সঙ্গে যোগ দেন। ফলে এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী অবস্থান ধর্মঘটস্থলে গিয়ে লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে কথা বলেন। পরে থানায় প্রবেশ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ আটক ছয়জনের মধ্য থেকে এজাহারে নাম না থাকায় হাসমত আলী, হৃদয়, পিন্টু ও খোকাকে ছেড়ে দেন। এজাহারভুক্ত দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের ছাড়িয়ে আনার পরপরই তারা এলাকায় গিয়ে নৌকার সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা ও মারপিট শুরু করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, আসামীরা ছাড়া পেয়ে আবার হামলা করেছে এমন কোনো তথ্য নেই আমার কাছে। তবে মহিষজোড়া গ্রামে ২৫ বছর ধরে মসজিদ নিয়ে ঝামেলা চলছে।