নওগাঁর আত্রাই উপজেলা মৎস্য দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এর কার্যক্রম। দপ্তরে ৬ জনের মঞ্জুরিকৃত পদ থাকলেও সেখানে রয়েছেন মাত্র দুইজন। ফলে উপজেলার মৎস্যজীবী ও মৎস্যচাষিরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
দপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এই উপজেলায় বেসরকারি পুকুর রয়েছে ৩ হাজার ৪১৪টি, সরকারি খাস পুকুর রয়েছে ২৬২টি। এ ছাড়া নদী ৪টি, বিল ২৫টি, খাল ৫টি ও অভয়াশ্রম রয়েছে ৭টি। এসব পুকুর নদী-নালা খাল-বিল থেকে মৎস্যজীবী এবং চাষিদের মাছ বিক্রির জন্য মৎস্য আড়ৎ রয়েছে ৩০টি।
সূত্র বলছে, মাছের রেণু পোনা উৎপাদনে বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে ২টি। নদী-নালা, খাল-বিল থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ১ হাজার ৭৫৫ জন মৎস্যজীবী এবং মাছ চাষ ও উৎপাদনের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে আছেন ১ হাজার ৭২০ জন মৎস্যচাষি। গত অর্থ বছরে এই উপজেলায় মাছ উৎপাদন হয়েছে ১০ হাজার ৯৮৮ মেট্রিকটন।
দপ্তরের সূত্র বলছে, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এবং অফিস সহায়ক দিয়ে চলছে অফিসের কার্যক্রম।
উপজেলার পাইকড়া গ্রামের মাছ চাষি অমল কুমার বলেন, “উত্তরাঞ্চলের মধ্যে মাছের ভাণ্ডারখ্যাত আমাদের আত্রাই উপজেলা। এই উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল এবং পুকুরের চাষকৃত মাছ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অথচ অফিসে লোকবল না থাকায় মাছ চাষ থেকে শুরু করে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কোনো পরামর্শ বা সহযোগিতা সময় মতো পেতে হিমশিম খেতে হয়।”
বান্দাইখাড়া গ্রামের আলম বলেন, “আমার পুকুরে চাষকৃত মাছের সমস্যা হওয়ায় পরামর্শ নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু অফিসে গিয়ে কাউকে পাইনি। অনেক সময় দপ্তরে গেলে ভাগ্যক্রমে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়। তাছাড়া অধিকাংশ সময় কর্মকর্তা বাইরে থাকায় অফিসে তালা ঝুলে থাকে। এ ছাড়া বেকায়দায় পরে অনেক সময় অফিস সহায়কের পরামর্শ নিতে হয় “
জানতে চাইলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “এই অফিসে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকট রয়েছে। তবে আশা করছি খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।”
নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আমিমুল এহসান বলেন, “জনবল সংকট নিরসনে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। হয়তো অল্প সময়ের মধ্যেই এ সংকটের সমাধান হবে।”