সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মন্দিরের পুরোহিতরা জানিয়েছেন, ২০ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে এই পূজা। এ কারণে শেরপুরের বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, মহল্লা এবং নিজস্ব বাসাবাড়িতে পূজার আয়োজন ঘিরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন মহল্লায় ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। তবে জেলা শহরের অদূরে সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের বয়ড়া পালপাড়ায় চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
পালপাড়ার প্রতিমা কারিগর গোপাল চন্দ্র পাল বলেন, অন্য বছরের মতো এবারও তারা রেডিমেড এবং অর্ডারকৃত প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে নিয়ে এসেছেন। এখন শুধু ফিনিশিং এবং রঙের কাজ বাদ রয়েছে। আগের মতো লাভ না হলেও বাপ-দাদার ঐতিহ্য ও পেশা ধরে রেখে কোনো রকমে টিকে আছেন তারা।
স্থানীয় লক্ষ্মণ চন্দ্র পাল বলেন, বয়ড়া পালপাড়ার চারটি পরিবারের ২৫-৩০ জন সদস্য দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করে অর্ডার সরবরাহ করা হবে এবং রেডিমেড প্রতিমাও বিক্রি শুরু হবে।
প্রতিমাশিল্পী যোগেশ চন্দ্র পাল বলেন, পালপাড়ায় কেউ কেউ ১০টা থেকে শুরু করে ২০টা প্রতিমা তৈরির অর্ডার নিয়েছেন। ইতিমধ্যে সেগুলোর প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ করা হয়েছে। এরপর বাকি কাজ শেষ করে ডেলিভারি দেওয়া হবে।
নারায়ণ চন্দ্র পাল বলেন, “শেরপুর ছাড়াও জামালপুরের বকশিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম ও ময়মনসিংহ থেকে আমরা প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়ে থাকি। পূজার বেশ কয়েক দিন আগেই ওইসব অর্ডারের প্রতিমা আমাদের সরবরাহ করতে হয়। এ ছাড়া আমাদের এখানকার কারিগরদের প্রতিমা তৈরির জন্য যশোর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশালসহ দেশের ৮-১০টি জেলার পূজা উদযাপন কমিটির লোকজন নিয়ে যায়।”
অধীর রঞ্জন পাল বলেন, পালপাড়ায় প্রতিমা তৈরির কারিগরদের পাশপাশি তাদের পরিবারের ছোট-বড় সব সদস্য বাড়িতে প্রতিমা তৈরিতে সহযোগিতা করে থাকেন। তবে পুরুষরা বাড়ির অর্ডারের পাশাপাশি তারা বিভিন্ন ক্লাব ও বাসাবাড়িতেও প্রতিমা তৈরির কাজ করছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত দে ভানু বলেন, জেলার সদর উপজেলাসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নকলায় এবার দেড় শতাধিক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতিও চলছে।