নিজের চোখে আলো নেই। তাতে কি? ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় মনোবল থাকলে যেকোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। তারই এক দৃষ্টান্ত মেধাবী অন্ধ শিক্ষার্থী অরিত্র ইশতিয়াক আলম। অন্ধকে জয় করতে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে তিনি। পরীক্ষার হলে অরিত্র কে প্রশ্ন বলে দিচ্ছেন শ্রুতি লেখক দশম শ্রেণির ছাত্রী সুচিত্রা।
অরিত্র ইশতিয়াক আলম গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ফিরোজ আলম মৃধার ছেলে। তিনি সরকারি মুকসুদপুর কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।
জানা গেছে, জন্ম থেকেই চোখে কম দেখতে পান অরিত্র। প্রথমে বাম চোখে সমস্যা থাকলেও ভারতে চোখের অপারেশনের পর তার ডান চোখেও সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতো সমস্যা থাকার পরেও অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা থেকেই তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে থাইল্যান্ড থেকে চলে এসেছেন দেশে।
অরিত্রের বাবা ফিরোজ আলম বলেন, “আমার ছেলে চোখে দেখতে পায় না। তাই একজন শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। আমার সন্তানের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।”
সরকারি মুকসুদপুর কলেজের প্রভাষক ড. কবির আহম্মেদ বলেন, “অরিত্র একজন মেধাবী ছাত্র, সে আমাদের কলেজের নিয়মিত ছাত্র। কলেজে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন সময়ে সে পুরষ্কার পেয়েছে। অন্ধত্বকে জয় করে শ্রুতি লেখক দিয়ে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। আশা করি সে ভালো ফলাফল করবে।”
মুকসুদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহাদৎ আলী মোল্লা বলেন, “অরিত্র বোর্ড থেকে অনুমতি নিয়ে শ্রুতি লেখক দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। তার এই ইচ্ছা শক্তিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি সে ভালো ফলাফল করবে।”