বর্ষ পরিক্রমায় ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে শেষ হতে চলেছে আরেকটি বছর। একদিন পরই নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে পুরো বিশ্ব। শনিবার সন্ধ্যায় ২০২২ সালে শেষ সূর্যাস্ত দেখবেন পৃথিবীবাসী। শেষ হতে যাওয়া এ বছরে দিনাজপুরের ইতিহাসে কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে আলোচিত ৫টি ঘটনা। যা জেলার সীমানা ছাড়িয়ে প্রভাব ফেলেছিল গোটা দেশে।
নবজাতক চুরি
গত ২ জানুয়ারি ২০২২ দুপুর ২টা, দিনটি ছিল রোববার। দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে একটি নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটে। পরদিন বিকেল ৩টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পারলে খবরটি পুলিশকে জানায়। ওই কন্যা নবজাতক সন্তানের মা জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার কারেন্টহাট এলাকার আব্দুল লতিফের স্ত্রী জায়েদা বেগম। ঘটনার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর নবজাতকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
আলোচিত অভিযান
গত ৩১ মে ২০২২ সন্ধ্যা ৬টা, দিনটি ছিল মঙ্গলবার। দিনাজপুর সদরের গোপালগঞ্জ বাজারের স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ৬টি গুদামে অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন মর্তুজা আল মুঈদ। সন্ধ্যা থেকে রাত প্রায় আড়াইটা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে জব্দ হয় ৫ হাজার ১২৪ টন আতপ চাল। যার বাজার মূল্য সেই সময় ছিল প্রায় ৪১ কোটি টাকা।
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড
গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ১১টা। দিনাজপুরের দাইনুর সীমান্তের ৩১৫ নম্বর পিলারের কাছে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ১৬ বছর বয়সী স্কুলছাত্র মিনহাজুল ইসলাম। সে সদর উপজেলার ৯ নম্বর আস্করপুর ইউনিয়নের ভিতরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ও খানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। নিহতের পর তার মরদেহ বিএসএফ সদস্যরা ভারতে নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য। এর প্রায় ৫ দিন পর মরদেহ হস্তান্তর করা হয় নিহতের পরিবারের কাছে।
আলোচিত মামলার রায়
গত ৮ নভেম্বর ২০২২ সকাল ১১টায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের আলোচিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে হত্যা চেষ্টার মামলায় রায় ঘোষণা হয়। যে ঘটনা, মামলা এবং মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল গোটা দেশ। মামলায় একমাত্র আসামি রবিউলকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। একইসঙ্গে আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়।
এর আগে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের মালি রবিউল ইসলাম তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হাতুড়ি দিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যান। ঘটনার পরদিন ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই পুলিশ পরিদর্শক শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন। প্রায় ২ বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণা হয়।
আলোচিত হত্যাকাণ্ড
২৫ নভেম্বর ২০২২ সকাল ৯টা, দিনটি ছিল শুক্রবার। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষ থেকে দুইটি শিশুদের মরদেহ উদ্ধার হয়। পরে জানা যায়, স্ত্রী সঙ্গে কলহের জেরে দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেন তাদের বাবা শরিফুল ইসলাম (৩৬)। তিনি বিরল পৌর শহরের শংকরপুর এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নিহত ওই শিশুর নাম রিমন (৭) ও ইমরান (৩)। ঘটনার পর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী উর্মি বেগমকে ঢাকা থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বাবা শরিফুল ইসলাম এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।