কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (২২ মার্চ) উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের মানিককান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ইফতার মাহফিলের সামনের সারিতে দেখা গেছে পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের ক্ষোভের জন্ম হয়েছে।
জানা গেছে, ভিটিকান্দি ইউনিয়নের ৬ নাম্বার ওয়ার্ডে বিএনপির উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহবুব আলম সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মহিউদ্দিন জিলানী ও ভিটিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মাজহারুল হক খোকা।
এ ইফতার মাহফিলের অর্থায়নে ছিলেন আবদুল লতিফ ভূইয়া, আব্দুল করিম ভূইয়া ও আলম মিয়া। এর মধ্যে লতিফ ভূইয়া ফ্রেন্ডস ক্লাবের সভাপতি পদে রয়েছেন। কুমিল্লা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরি এ ক্লাব থেকে নিজের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতেন। আওয়ামী লীগ আমলে এ ক্লাবকে সামনে রেখে লতিফ ভূইয়া প্রভাব বিস্তার করতেন। আর আব্দুল করিম ভূইয়া ভিটিকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে রয়েছেন। আলম মিয়াকে স্থানীয়রা আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবেই চেনেন।
ইফতার মাহফিলে মঞ্চে সামনের সারিতে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও দেখা যায়। মাহফিলের বেশ কয়েকটি ছবি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ভাইরালও হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. মেহেদী হাসান সেলিম ভূইয়া নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টে লেখেন, “ভিটিকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের লোকদেরকে পূনর্বাসন করছেন বিএনপির লোকজন। তাদেরকে সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সতর্ক না হলে ছবিসহ প্রকাশ করতে বাধ্য হবো।”
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, অতিথি আসনের প্রথম সারিতে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলের আয়োজক আওয়ামী লীগ নেতারা বসে আছেন।
এ বিষয়ে জানতে ভিটিকান্দি ৬ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক ডালিম মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক রমিজ মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, “ইফতার মাহফিলের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। ফেসবুকে দেখেছি ইফতার মাহফিল হয়েছে।”
ইফতার মাহফিলের প্রধান অতিথি মাহবুব আলম সরকার বলেন, “এ বিষয়ে আমাকে কোনো প্রশ্ন কইরেন না। আমার বিরুদ্ধে যা লেখার লেখেন।” এরপর ফোনটি কেটে দেন তিনি।
বিশেষ অতিথি গোলাম মহিউদ্দিন জিলানী বলেন, “আমি ওই ইফতার মাহফিলের অতিথি ছিলাম না। ব্যক্তিগত কাজে মানিককান্দি গিয়েছিলাম। ইফতারের কিছু সময় আগে আসার পথে ভিটিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মাজহারুল হক আমাকে ইফতার না করিয়ে ছাড়ছিল না। বিএনপির ব্যানার দেখে আমি তাদের সঙ্গে ইফতার করেছি। কে আয়োজক তাও জানি না।”
এদিকে, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের দোসরদের পদপদবী দিয়ে জায়গা করে দিচ্ছে নেতারা।