নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পরকীয়ায় ব্যর্থ হয়ে এক গৃহবধূকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দূর-সম্পর্কের এক দেবরের বিরুদ্ধে। ওই সময় গৃহবধূর সঙ্গে থাকা শ্বশুর রেজাউল হককেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করা হয়।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার মাইল্যা বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৫)। তিনি উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার নোয়াবাড়ির কুয়েতপ্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।
অপর দিকে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম ওরফে খালেদ (৩০) একই বাড়ির ডিশ লিটনের ছেলে। তিনি নিহতের দূর-সম্পর্কের দেবর হন।
নিহতের বড় বোন ফারজানা আক্তার সুমি বলেন, ১৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। ঘাতক খালেদ পিংকির দূর সম্পর্কের চাচাতো দেবর হয় এবং একই বাড়ির বাসিন্দা। বছর খানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল নষ্ট হয়ে যায়। স্বামী প্রবাসে থাকায় তার বড় ছেলের মাধ্যমে মোবাইলটি খালেদকে বাজার থেকে ঠিক করে আনতে দেন। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে পিংকির স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবিও ভিডিও নিজের মোবাইলে নিয়ে নেয়।
এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে পিংকির কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা আদায় করে। একই কায়দায় পরকীয়া ও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা চালায়। এরপর সে আরও টাকা দাবি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে পিংকিকে আদালতে মামলা করেন। দুই মাস আগে পিংকির স্বামী দেশে ফিরলে তার ওপর হামলা চালান খালেদ। আর আজ পিংকিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করল।
নিহতের দুলাভাই বাবর হোসেন বলেন, “সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে শ্বশুরের সঙ্গে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন পিংকি। চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছালে খালেদ তাদের গতি রোধ করেন। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন খালেদ। তখন পুত্রবধূকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে শ্বশুর রেজাউল হোসনকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়রা পিংকি ও তার শ্বশুরকে উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করেন।”
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবু তালেব বলেন, পিংকিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে নিহতের স্বজনরা মরদেহ নিয়ে যায়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, নিহত গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে খালেদের পরিবারের আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। অনেক আগে দেবর-ভাবির মধ্যে হালকা সম্পর্কও ছিল বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।