সরকার পতনের পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এক মাস বন্ধ থাকায় এখন সেখানে চালু করা হচ্ছে ফাস্টফুডের দোকান। দোকানের সামনে টাঙানো হয়েছে ‘আর কে ফাস্টফুড অ্যান্ড কফি হাউস’ নামের একটি ব্যানার।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের হামলা ক্ষতিগ্রস্ত শাটারটি মেরামত করা হয়েছে। নতুনভাবে রং করে সামনে ‘আর কে ফাস্টফুড অ্যান্ড কফি হাউস’ নামে একটি ব্যানার টাঙানো দেখা যায়। যেখানে লেখা রয়েছে শিগগিরই উদ্বোধন হবে প্রতিষ্ঠানটি।
আর কে ফাস্টফুড অ্যান্ড কফি হাউসের মালিক মিলন মিয়া জানান, সীমান্তর মা ঝর্ণা হোসেনের কাছ থেকে তিনি তিন বছরের জন্য দোকানটি ভাড়া নিয়েছেন। এখানে ফাস্টফুডের দোকান দেওয়া হবে। ভেতরে ডেকোরেশনের কাজ চলছে দ্রুত দোকানটি উদ্বোধন করা হবে।
জানা যায়, স্থানীয় প্রয়াত সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেন উপজেলা সদরের কলেজ রোডে তার জায়গায় নির্মিত বিপণিবিতানের একটি কক্ষে প্রায় এক যুগ আগে দলীয় কার্যালয়টি করেন। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর মৃত্যুর পর তার ছেলে ও মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত এটির দেখাশোনা করতেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে ভেতরে থাকা আসবাবপত্র বাইরে বের করে আগুন ধরিয়ে দেন। তারপর থেকে কার্যালয়টি এক মাস ধরে বন্ধ ছিল।
এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ফাস্টফুডের দোকান হওয়ার খবরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা কাদের মিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অফিসে বসে দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজ করতেন। সাময়িক সমস্যার কারণে কার্যালয়ে ফাস্টফুডের দোকান দেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না।”
এবিষয়ে কথা বলতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাহরীম হোসেন সীমান্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, “কোনো আলোচনা না করে এভাবে অন্যের কাছে অফিস ভাড়া দেওয়া ঠিক করেনি।“
উল্লেখ্য, মির্জাপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে কলেজছাত্র ইমনের মৃত্যুর ঘটনায় গত ২২ আগস্ট মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। এতে স্থানীয় সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্তসহ ১৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এরপর থেকে গ্রেপ্তারের ভয়ে দলের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।