সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগেুলোর সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরীফে হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে দরবার শরীফের ভক্ত-অনুরাগীরা সেমাই, পায়েস ও বিরিয়ানি খেয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন।
বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের নামাজ আদায় শেষে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভক্ত-অনুরাগীদের তবারক হিসেবে এ আপ্যায়ন করে সুরেশ্বর দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, জান শরীফ শাহ সুরেশ্বরী নামে এক সুফি সাধক কর্তৃক শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হয় সুরেশ্বর পাক দরবার শরীফ। দরবার শরীফের কয়েক লাখ ভক্ত ও অনুরাগী রয়েছে পিরোজপুর, ভোলা, গাজীপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এসব ভক্ত ও অনুরাগীরা ১৯২৮ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের একদিন আগেই রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে সুরেশ্বর দরবার শরীফে ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছেন সোবহান মাদবর। তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমার পরিবারের কয়েক পুরুষ ধরে সুরেশ্বর দরবার শরীফের নিয়ম অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করে থাকি। নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছি ঈদের নামাজ পড়তে। নামাজ শেষে তবারক হিসেবে এবছর সেমাই, বিরিয়ানি দেওয়া হয়েছে। পবিত্র এই তবরাক খেয়ে বাড়িতে গিয়ে সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করব। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।”
সুফিয়া বেগম নামের এক নারী ভক্ত সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমরা সুরেশ্বরের ভক্ত আশেকান মাহে রমজানের রোজা রেখে একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করলাম। নামাজ শেষে সবাই একসঙ্গে সেমাই, পায়েস ও বিরিয়ানি খেয়েছি। একসঙ্গে নামাজ আদায় করে সুরেশ্বর দরবার শরীফে তবারক খেলে ঈদের আনন্দ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।”
দরবার শরিফের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (প্রধান খাদেম) মুনছুর আলী মৃধা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভক্ত-অনুসারী পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে এক সঙ্গে তবারক খেয়েছেন। এক সঙ্গে মহব্বতের সঙ্গে তবারক খেয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন দরবার শরীফের ভক্ত-অনুরাগীরা। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।”
সুরেশ্বর দরবার শরীফের গদীনশীন পীর শাহ মুজাদ্দেদী সৈয়দ তৌহিদুল হোসাইন শাহিন নূরী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “রমজান আত্মসংযমের মাস। এই মাসে পবিত্র রোজা পালন শেষে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন ভক্ত ও অনুসারী মুসল্লিরা। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজ শেষে সবাই একসঙ্গে তবারক খেয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। এভাবে তবারক খেয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা সুরেশ্বর দরবার শরীফের ঐতিহ্য। সবাইকে সুরেশ্বর পাক দরবার শরীফের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।”