কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের চেল্লাখালী, মহারশি, ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বাঁধ ভেঙে জেলার চারটি উপজেলার ৮৫টি গ্রামের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোরে ঝিনাইগাতীর রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, ঝিনাইগাতী সদর চতল, বনগাঁওসহ কয়েক স্থানে বাধ ভেঙে অন্তত ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঢলের পানি প্রবেশ করেছে উপজেলা শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন অফিস ও বাড়িঘরে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪৬ সেন্টিমিটার, ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে জেলার নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীর খালভাঙা এলাকায় ভাঙনের কারণে প্রায় ২৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া শ্রীবরদী উপজেলার সোমেশ্বরী নদী বেড়ে গিয়ে ২০টি গ্রাম এবং সদর উপজেলার কামারের চর, বলাইয়ের চরসহ ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে প্লাবিত এলাকায় বানের পানিতে ভেসে গেছে বহু মৎস্য খামার, পুকুর, বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও বীজতলা।
ঝিনাইগাতীর রামেরকুড়া এলাকার বাসিন্দা বাকের মিয়া, ওয়াদুদ মিয়া ও আব্দুস সাকুর বলেন, মহারশি নদীর ব্রিজপাড় এলাকা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা দখল করে বসতি স্থাপন হওয়ায় নদী নাব্যতা হারিয়েছে। নদী দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে দেওয়াসহ স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক, উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদৎ হোসেন, ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ঝিনাইগাতীর ইউএনও আশরাফুল কবীর রাসেল বলেন, “মহারশি নদীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আর্থিক অনুদান ও ঢেউটিন প্রদান করা হবে।”
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নকিবুজ্জামান খান বলেন, ইতোমধ্যে ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর ভাঙা স্থানে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।