রংপুরে পুলিশের প্রকাশ্য গুলিতে নিহত আবু সাঈদ হত্যা মামলা, ভ্যানচালক মানিক হত্যা, তাজহাট থানা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা পুলিশ লাইন ও ট্রাফিক অফিসে হামলা চেষ্টার মামলায় কারাগারে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ আট শিক্ষার্থী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে আদালত বসিয়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিন রাত সাড়ে ১১টায় রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা। রাত ৯টায় রংপুর মেট্রোপলিটন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আহসানুল হক রানা তাঁদের জামিনের আদেশ দেন।
এর আগে আদালতের পরিদর্শক পৃথিশ রায় অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে কল করে আদালতে আনেন। সরকারের বিশেষ আদেশ প্রতিপালনে লিগ্যাল এইড বাংলাদেশ ব্লাস্ট রংপুর শাখার প্যানেল আইনজীবী শামিম-আল মামুন তাদের জামিন শুনানি করেন।
মুক্তি পাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হলেন রংপুর সরকারি কলেজের তৌফিক ওমর ধ্রুব এবং জাফরগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আমির হামজা, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের, মো. মহিন, পাভেল মিয়া, আল মারজান, নিয়াজ আহমেদ রকি ও সৌরভ মিয়া। পুলিশ তাদের ১৯ ও ২০ বছর বয়স দেখিয়ে আবু সাঈদ হত্যা মামলা, অটোচালক মানিক হত্যা, তাজহাট থানায় আগুন ও ভাঙচুরের মামলা এবং জেলা ট্রাফিক ও পুলিশ লাইনে হামলা-ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। ১৯ থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিভাবকেরা জানান, জামিন দেওয়া হলেও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহতি পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
জামিনকারী আইনজীবী শামীম আল মামুন বলেন, “সরকারি উদ্যোগে সরকারি লিগ্যাল এইডের সহযোগিতায় শুক্রবার রাতে বিশেষ আদালতে আট শিক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। তাঁদের চলমান এইচএসসি পরীক্ষা ও শিক্ষার্থী বিবেচনায় জামিন দিয়েছেন।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী জোবায়দুল ইসলাম বুলেট বলেন, “শিক্ষার্থীদের এভাবে কারাগারে পাঠানো বেআইনি হয়েছে। জামিন হলেও অব্যাহতি পাওয়া নিয়েও শঙ্কা আছে। কারণ, পুলিশই মামলা দিয়েছে। তারাই তদন্ত করছে। তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।”
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, ‘বিশেষ আদেশে আমরা শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি। আদালত রাতেই কোর্ট বসিয়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন। তাদের রাতেই কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মামলা তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তারা অব্যাহতি পাবেন। এটা তদন্তের বিষয়, এখনই বলা যাচ্ছে না।’