• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত ৪২ গ্রাম, দুর্ভোগে মানুষ


নেত্রকোণা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত ৪২ গ্রাম, দুর্ভোগে মানুষ

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার বেশ কিছু নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে নতুন নিচু এলাকা প্লাবিত হতে থাকে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৪২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

আজ দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বড় নদী উব্দাখালীর পানি বেড়ে কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদিন জানান, তার ইউনিয়নের বেনুয়া, খলা, চারালকোনা, সনুড়া, সাকুয়া ইন্দ্রপুরসহ বেশ কিছু গ্রামে নতুন করে পানি ঢুকেছে। নিচু এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে এলাকার মানুষ কিছুটা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

কলমাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুন বলেন, বাহাদুরকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইজপাড়া, খলা-১, খলা-২, বড়খাপন, চৌহাট্টা, বাউসারি, হাইলাটি, রিকা, পোগলা, ভাটিপাড়াসহ অর্ধশতাধিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে।

নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ৪৮ ঘণ্টায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও জারিয়া ঝাঞ্জাইল রেলস্টেশন এলাকায় ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এতে নেত্রকোনা জেলার ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ৪২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে নতুন করে আরও বেশ কিছু এলাকা পানি ঢুকে। পোগলা ইউনিয়নের কালাকোনা, জীবনপুর, গোয়াতলা, কৈলাটি, মঙ্গলসিধ, কৈলাটি ইউনিয়নের খলা, চারালকোনা, বাবনীকোনা, সনুরা, কনুরা, সাকুয়া ইন্দ্রপুর, নাজিরপুর ইউনিয়নের গনিয়ারগাঁও, পাঁচকাঠা, গান্ধারকান্দা, বেনুয়া, কলমাকান্দা সদরের শোলজান, সাউথপাড়া, মনতলা, ইসবপুরসহ বিভিন্ন এলাকা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পালপাড়া-সিধলী, কালিহালা-বিশরপাশা, কলমাকান্দা-মনতলা, পাগলা-ঘনিচাসহ বেশ কিছু গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার মাঠ প্লাবিত হয়েছে। অনেকের পুকুরে পানি ঢুকে মাছ বেরিয়ে গেছে। সাতটি পরিবার বিশরপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে।

পাউবোর নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কংস, সোমেশ্বরী, ধনুসহ অন্য বড় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরি, মদন, মোহনগঞ্জ ও বারহাট্টা উপজেলায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!