টাঙ্গাইলের মধুপুরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে বৃদ্ধা মা ও তার দুই ছেলে এবং বড় ছেলের স্ত্রীসহ চারজনকে গাছে বেঁধে নির্যাতনে অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে মধুপুর পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুন্ডুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে নির্যাতনের ভিডিও এক ব্যক্তি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে মুহূর্তে তা নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। নির্যাতনকালে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে তাদের উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
নির্যাতিতরা হলেন ওই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী শাফিয়া বেগম (৫৫), বড় ছেলে আলমগীর হোসেন, ছোট ছেলে জুব্বার আলী ও আলমগীরের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলমগীরকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে এবং শাফিয়া ও তার ছেলেবউ জ্যোৎস্নাকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, পুন্ডুরার মৃত নুরুল ইসলামের দুই ছেলে আলমগীর ও জুব্বার মিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী মৃত আবু সেকের ছেলে কালু মিয়া সেখসহ তার ভাইদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। দুপক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও চলমান। ২৩ বছর মামলা চলার পর চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আলমগীর জুব্বাররা রায় পেয়ে জমির খাজনা খারিজ দিয়েছেন। মাঠ ও প্রিন্ট পরচা তাদের নামেই এসেছে।
এনিয়ে প্রতিপক্ষ কালু মিয়া শেখ, ভাই আজগর আলী, সামাদ মিয়া কয়েক মাস আগে ওই জমির মালিক দাবি করে আদালতে ১৪৪ জারি চেয়ে আবেদন করলে আদালত আদেশ দেন। আলমগীর, জুব্বাররা কাগজপত্রের ভিত্তিতে ১৪৪ ধারার বিপরীতে জজ কোর্টে আপিল করেন। এ নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে দুই পরিবারে উত্তেজনা চলছিল।
মঙ্গলবার সকালে কালু মিয়া গংরা বিবদমান জমিতে গিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আলমগীর, জুব্বাররা বাধা দিতে গেলে তাদের প্রথমে পিটিয়ে পরে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়। মা শাফিয়া এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা তাকেও গাছে বেঁধে ফেলেন। শাশুড়ির কাছে এগিয়ে গেলে ছেলে আলমগীরের বউ জ্যোৎস্না বেগমকেও হাত-পা বেঁধে বসিয়ে রাখা হয়।
এ অবস্থায় পুলিশকে ফোন দিয়ে জানানো হলেও পুলিশ দ্রুত না আসায় নির্যাতিতদের পক্ষে ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চাওয়া হয়। পরে মধুপুর থানা-পুলিশ এসে ৪ জনকে উদ্ধার করে। এমন ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। আজকের ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি বলে মামলা হয়নি। এ ছাড়া দুই পক্ষকে ডেকে এনে ১৪৪ ধারা জারি ও তার আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শান্তি রক্ষায় জমিতে যেতে বারণ করা হয়েছে।