চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে রংপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া উভয় পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নগরীর ভাঙ্গা মসজিদ এলাকায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
নিহতদের মধ্যে একজন সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হারাধন হারা। বাকি তিনজনের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে রংপুর টাউন হলের সামনে সড়কে শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করে। এক ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেখানে জমায়েত হয়ে সরকারের পতনে এক দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অনেক অভিভাবকও আন্দোলনে যোগ দেন।
বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে ভাঙ্গা মসজিদের সামনে এগিয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু যায়। আধা ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলে। এতে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে থাকা হেলমেট পরিহিত একজনকে পিস্তল বের করে গুলি করতে দেখা যায়। পরে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পিছু হটতে হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। এসময় সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হারাধন হারাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
শিক্ষার্থী মৌমিতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের এখন আলোচনায় বসতে বলতেছেন। তার বাবা তো আলোচনায় বসেননি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার ভাইয়ের লাশের ওপর দিয়ে আলোচনায় বসতে পারব না’। তাই আর কোনো আলোচনা নয়, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চাই।”
শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “বর্তমান সরকার পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবির ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আমি প্রশাসনের ভাইদের বলব আপনার নিরপেক্ষ থাকেন। কারণ যারা আন্দোলনে রয়েছে তারা আপনার ভাই-বোন। তাদের ওপর গুলি করবেন না।”
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে আমরাই অনেকটা অবরুদ্ধ রয়েছি। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”