জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও গবেষক ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলকে ঘিরে লালমনিরহাটে ১০ লাখ মানুষের সমাগমের জন্য ৪টি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে।
জেলা শহরের সবচেয়ে বড় সোহরাওয়ার্দী মাঠে থাকবে মূল মঞ্চ। এছাড়া পুরুষদের জন্য পাশ্ববর্তী কালেক্টরেট মাঠ ও পিসি স্কুল মাঠ এবং নারীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে জেলা স্টেডিয়াম মাঠ। সকল মাঠেই থাকবে প্রজেক্টরের ব্যবস্থা।
ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাট এর আয়োজনে ঐতিহাসিক এই মাহফিল আগামী শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জোহরের নামাজ শেষে বয়ান পেশ করবেন মিজানুর রহমান আজহারী।
এদিকে মাহফিল ঘিরে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোতায়েন থাকবে বিপুলসংখ্যক আনসার, পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীসহ মাহফিল আয়োজকদের স্বেচ্ছাসেবক টিম।
আয়োজক কমিটি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের বাইরে নির্বাসিত ছিলেন বিশ্ববরেণ্য মুফাসসির ড. মিজানুর রহমান আজহারী। গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে শেখ হাসিনা সরকার পালিয়ে গেলে দেশে ফিরে আসেন মিজানুর রহমান আজহারী। এরপর দেশের মানুষের আগ্রহে বিভিন্ন স্থানে মাহফিল শুরু করেছেন তিনি।
জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক যুগ পর লালমনিরহাটের মাটিতে পা রাখতে যাচ্ছেন বিশ্ববরেণ্য কোনো মোফাসির। গত ২৮ বছর আগে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাহফিল করেন বিশ্বনন্দিত ইসলামি বক্তা ও জামায়াত নেতা প্রয়াত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এই দীর্ঘ সময় পর বিশ্ববরেণ্য স্কলারের আগমন ঘিরে আনন্দিত ইসলামপ্রিয় মানুষ।
সরেজমিন জানা যায়, ঐতিহাসিক এ মাহফিল সফল করতে মঞ্চ প্রস্তুতের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ করেছেন আয়োজকরা। এছাড়া সকল ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। আয়োজক কমিটির সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে জননিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে যাবে মাহফিল ও তার আশপাশের এলাকা।
নিরাপত্তায় থাকবে বিপুল সংখ্যক আনসার ও পুলিশ সদস্য। থাকবে র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল। সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশ সদস্য। এছাড়াও আয়োজক কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন প্রায় ৫ হাজার। সব মিলিয়ে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হবে পুরো শহর।
ইসলামিক অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিমের সভাপতিত্বে মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
আয়োজক কমিটির সদস্য ইমাম রাশেদুল ইসলাম লিজু বলেন, “মূল প্যান্ডেলের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। মাঠের প্রবেশপথেই তল্লাশি চালানো হবে।”
মাহফিলের সভাপতি আব্দুল হাকিম বলেন, “মাহফিল সফল করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে মাহফিলের মাঠগুলোতে। পুরো শহরে সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা থাকবে।”
লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, মাহফিলে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে আনসার, পুলিশ র্যাবসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আয়োজকদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে প্রায় ৫ হাজার। তিনি মাহফিলে নারীদের স্বর্ণের অলংকার সঙ্গে না আনার আহ্বান জানান।