প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয়েছেন মিলন হোসেন (২৩) নামের এক কলেজছাত্র। পরে অপহরণকারীদের মুক্তিপণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে ফিরে পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার।
অপহৃত মিলন হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন হোসেন। ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে মিলনের পরিবারকে কল করে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা।
প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় তারা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে। তিন দিন পর ১৫ লাখ টাকা চায় চক্রটি। সবশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহৃত মিলনের পরিবার জানায়, অপহরণকারীরা যখন যত টাকা চেয়েছে তা দিতে রাজি ছিল ভুক্তভোগী পরিবারটি। তবে বিভিন্ন সময় টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ঘটনাটি দীর্ঘ করেছে অপহরণকারীরা। সবশেষ ৯ মার্চ রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ৯টা ৫৪ মিনিটের ট্রেনে উঠতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া নামক স্থানে চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে চক্রটি। মিলনের জন্য দুই জোড়া পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ১০ মিনিট পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্র।
এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় চক্রটি। স্টেশনে গিয়ে সম্পূর্ণ স্টেশন তন্নতন্ন করে খুঁজাখুঁজি করা হয়। সেই রাতের ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ছেলের দেখা পায়নি পরিবারটি।
এ বিষয়ে জানতে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলেন, “অপহরণের ঘটনাটি ঘটার পরদিন মৌখিকভাবে পুলিশকে জানায় মিলনের পরিবার। তখন থেকেই চক্রটিকে ধরার জন্য কাজ করছে পুলিশ। তবে তদন্ত কাজে মিলনের পরিবারের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা পাইনি আমরা।”
তিনি আরও বলেন, “সবশেষ ৫ মার্চ ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে মিলনের বাবা পানজাব আলী। এরপর থেকে পুলিশের সঙ্গে পানজাব আলী আর কোনো ধরনের যোগাযোগ রাখেনি। এ ছাড়া অপহরণকারীদের সঙ্গে ২৫ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টিও তারা পুলিশের কাছে গোপন রেখেছে।”