• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

টাঙ্গাইলে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ২২ শিক্ষার্থী


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৪, ০৯:০৯ পিএম
টাঙ্গাইলে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ২২ শিক্ষার্থী

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি ২২ জন শিক্ষার্থী।

রোববার (৩০ জুন) সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে নিকরাইল শমশের ফকির ডিগ্রি কলেজের ২২ জন শিক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ হয়ে নিকরাইলের পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভাঙচুর করতে থাকে। 

এসময় পুলিশের সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিনা কারণে পুলিশের সদস্যরা পরীক্ষার্থীদের মারধর করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় কেন্দ্রের বাইরে গেটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এসময় অভিভাবকরাও কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের সান্তনা দেন আর দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানান।

জানা যায়, উপজেলার নিকরাইল শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত টাকার চেয়ে বাড়তি টাকা দাবি করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকার করে। পরে এই সুযোগে ওই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন ২২ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণের জন্য ৩ হাজার টাকা করে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীদের বোর্ড থেকে কোনো রেজিস্ট্রেশন কার্ড বা প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি।

শনিবার (২৯ জুন) ২২ জন পরীক্ষার্থী কলেজে গিয়ে প্রবেশপত্র নিতে গেলে তাদের ফরম পূরণ হয়নি বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক লোকমান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পায়নি।

শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজ থেকে নিয়মিত ও অনিয়মিত মিলিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় এই পলশিয়া রানী দীনমনি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৭১ জন অংশগ্রহণ করেছে।

পরীক্ষার্থীরা বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবিকৃত ৮ হাজার টাকা দিতে না পারায় ফরম পূরণ করেনি। পরে কলেজের বাংলা প্রভাষক লোকমানের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে জালিয়াতির শিকার হয়েছি। টাকা দিয়েও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারলাম না। আমাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকের প্রতারণার কারণে। আমরা যেকোন মূল্যে পরীক্ষা দিতে চাই।”

শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লোকমান হোসেন বলেন, “ওই ২২ শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ হয়েছে। সব প্রমাণপত্র আমার কাছে রয়েছে। কিন্তু শনিবার রাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বোর্ডে ফোন করে ২২জন পরীক্ষার্থীর ফরম বাতিল করেছেন।”

তবে শমসের ফকির ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আক্তারুজাজামান জানান, পরীক্ষার্থীরা কলেজে কোনো যোগাযোগ করেনি। অনেক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ফরম পূরণ করা হয়েছে। বাড়তি ফি নেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সত্য না।

ভুঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, পরীক্ষা দিতে না পারা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্রে আন্দোলন করে। পরে কেন্দ্র অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কমর্কর্তা মো. মামুনুর রশীদ জানান, ২২ পরীক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের অগোচরে এবং অবৈধভাবে এইচএসসি ফরম পূরণ করা হয়েছে বলে কলেজ অধ্যক্ষ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই ২২ পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ বাতিল করায় তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Link copied!