• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

১০ বছরে করেছেন ২১ বিয়ে, সরকারি ঘর চান মরু মিয়া


নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
১০ বছরে করেছেন ২১ বিয়ে, সরকারি ঘর চান মরু মিয়া

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ২১ বিয়ে করেছেন মরু মিয়া (৩৫) নামের এক যুবক। ১০ বছরে ২১টি বিয়ে করে এলাকায় হইচই ফেলে দিয়েছেন এই যুবক। মরু মিয়ার যাদের বিয়ে করেছেন তারা সবাই তার চেয়ে বয়সে বড়। কোনো কোনো নারীকে বিয়ে করেছেন বাচ্চাসহ। বর্তমানে তার সঙ্গে তিন বউ থাকলেও বাকি বউরা কোথায় আছেন তা জানেন না মরু মিয়া।

জানা যায়, মরু মিয়া মান্দা উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। মরু মিয়ার বাবা কাজ করতেন বয়লারে (ধানের চাতাল)। সেই সুবাদে ছোটবেলা থেকেই তিনি বয়লারে বেড়ে ওঠেন। এরপর মরু মিয়া বড় হলে তিনিও যোগ দেন সেই পেশায়। কাজের ফাঁকে প্রায় দশ বছর আগে পরিবারের পছন্দে প্রথম বিয়ে করেন মরু মিয়া। এরপর নানা ঘটনায় একের পর এক বিয়ে করতে থাকেন তিনি। প্রতিবার বাড়ি আসার সময় নতুন বউ নিয়ে আসতেন। এলাকাবাসী সেসব নারীদের পরিচয় জানতে চাইলে নতুন বিয়ে করা স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার এমন ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। বর্তমানে মরু মিয়া শেষ স্ত্রীকে নিয়ে প্রতিদিন ভ্যানযোগে মান্দা ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাট-বাজারে সাহায্য চেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

মরু মিয়া জানান, কোনো ওষুধ বা বশ করে নয়, তাকে দেখলেই বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যেতেন নারীরা। কোনো নারী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মন খারাপ করবেন ভেবে না বলতেন না। এরপর চলতি পথেই কোনো মৌলভীকে ৫০০ টাকা দিয়ে কালিমা পড়ে বিয়ে করতেন। কিছুদিন সংসার করার পর যেখানে বিয়ে সেখান থেকেই বিচ্ছেদ হতো। কোনো কাবিননামা না থাকায় কোনো স্ত্রী আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারে না বলেও জানান তিনি।

সব বউয়ের নাম ভুলে গেলেও বর্তমানে ৮ বউয়ের নাম মনে আছে মরু মিয়ার। তারা হলেন— শহিদা, নার্গিস, সেলিনা, আলেয়া, তারা, জোসনা, রাবেয়া ও পারুল।

মরু মিয়া বলেন, “যাদের বিয়ে করেছি তারা সবাই এক বাচ্চা বা দুই বাচ্চার মা। আমাকে দেখার পর তারাই বিয়ে করে। আমার থেকে বয়সে বড় হওয়ায় আমি তাদেরকে কিছু বলতেও পারি না। এইভাবে এখনো পর্যন্ত ২১টি বিয়ে করেছি। এখন তিনটি বউ এক সঙ্গে একই বাড়িতে আছে। তবে সবাই আলাদা আলাদা থাকেন।”

মরু মিয়া জানান, প্রায় দুই বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনা পায়ে আঘাত পান। এরপর থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেন। কোনো ভারি কাজ করতে পারেন না। সেসময় শেষ বউ ছাড়া কেউ সেবা যত্ন না করলে ওয়াদা করেন আরও বিয়ে করবেন না এবং কেউ যেন কখনো তার মতো এতগুলো বিয়ে করে ভুল না করে সেই কথাও জানান। নিজের কোনো জায়গা জমি না থাকায় সরকারিভাবে ঘর করে দেওয়ার দাবি জানান মরু মিয়া।

তার শেষ স্ত্রী বলেন, “মোবাইলে আমার সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো। তারপর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে এই বাড়ি এসে দুই বউকে দেখেছি। আমরা বোনের মতোই এখনো মিলেমিশে থাকি। তবে কোনো কারণে দুকথা হলে পরে আবার আমরা ঠিক হয়ে যাই। কেউ কাউকে হিংসা করি না।”

তবে মরু মিয়ার প্রথম স্ত্রী শহিদা অভিযোগ করেন বলেন, বিয়ের পর থেকেই ভরণ পোষণ দেওয়া বন্ধ করে দেন তার স্বামী। অনেক কষ্ট দেন। সন্তানদের কোনো দেখাশোনা করেন না।

স্থানীয় খোরশেদ আলম বলেন, মরু প্রথমে তার বাবার ইচ্ছায় প্রথম বিয়ে করেন। এরপর স্ত্রী রেখে বয়লারে (ধানের চাতাল) চলে যান। এরপর বাড়ি এলেই একটি করে মেয়ে নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসা করলে বলেন স্ত্রী হয়। তবে মেয়েগুলোকে দেখলে মনে হয় মরুর মায়ের চেয়ে বয়স বেশি। বর্তমানে মরু বিভিন্ন হাট-বাজারে সাহায্য চেয়ে জীবিকা নির্বাহ করায় তাকে সরকারিভাবে সহায়তার দাবি জানান তিনি।

Link copied!