কুড়িগ্রামের উলিপুরে গিদারি নদীর ওপর নির্মিত সেতুর পিলারের একাংশ পানির স্রোতে ধসে গেছে। যেকোনো সময় পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে সেতুটি। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির ফলে পানি স্রোত বেশি হওয়ায় সেতুর নিচের মাটি সরে গিয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা ।
সেতুটি উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাগজি পাড়া গ্রামের গিদারি নদীর ওপর অবস্থিত।
স্থানীয়রা জানান, তিন দিন আগে পানির তীব্র স্রোতে সেতুর উত্তর দিকের নিচের মাটি সরে যায়। এতে সেতুর নিচের দিকের ভিত্তিতে ভাঙন ধরে।
রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত মাঝের পিলারের অর্ধেক অংশ ধসে গেছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত পানির স্রোত না কমায় এখনো ধস অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলে পানির স্রোতের তীব্রতা কমানোর চেষ্টা করলেও সেটি ব্যর্থ হয়।
এ সেতু দিয়ে ইউনিয়নের ২, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় দুই হাজার মানুষসহ স্কুলের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
পান্ডুল ইউনিয়নের চাকলির পাড় গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ আলী বলেন, “সেতুটি পাকিস্তান আমলের। সেতুটি ভেঙে পড়লে আমাদের অনেক অসুবিধা হবে। দোকানপাটের মালপত্র আনার জন্য অনেক দূর ঘুরে যেতে হবে।”
একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা শাহিনুল ইসলাম লিটন বলেন, কিছুদিন আগে এই নদীটি খনন করা হয়। এরপর থেকে সেতুর উত্তর দিকের থেকে দক্ষিণ দিকে উঁচু ছিল। এ জন্য পানিপ্রবাহের সময় উঁচু থেকে নিচুতে বেশি বেগে পানি যাচ্ছে। এতে সেতুর নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুর পিলার ধসে যাচ্ছে।
কাগজি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদুরী রানী বলে, “আমরা এই সেতু দিয়া স্কুল যাই। সেতুতে উঠলে গা কাঁপে, ভয় লাগে।”
পান্ডুল ইউপি সদস্য মো. শাহীন মিয়া বলেন, “আমার ধারণা যে সেতুটি আর টিকবে না। চেয়ারম্যান সাহেব লাল পতাকা টাঙে দিছে। মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছে।”
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নদী খনন প্রকল্পের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমরা নদী খননের সময় সেতুর উভয় পাশে ২৫ মিটার জায়গা ফাঁকা রেখে খনন করেছি। সেতুটি পুরোনো হওয়ায় পানির স্রোত সহ্য করতে না পেরে ধসে পড়ছে। জিও ব্যাগ ব্যবহার করে পানির স্রোত কমানোর চেষ্টা করছি।”
পান্ডুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, “সেতুটি অনেক পুরোনো। আমি নিজে সেতুর সামনে লাল পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছি। একটি সাইনবোর্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতেছি, যাতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি।”
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে ফোন দেবেন। তিনি জানেন বিষয়টা তার জানা নেই।