কক্সবাজারে নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সাত জনকে ঘটনায় আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর স্বামী। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে ৩ জনকে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে মামলা নথিভুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস।
নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন আশিকুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া, মেহেদি হাসান বাবু ও হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।
ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, ওই নারী পর্যটককে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। সেখানকার রিপোর্ট নিয়ে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
এর আগে নারী পর্যটককে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তিনজনকে শনাক্তের কথা জানায় র্যাব-১৫। আর ধর্ষকদের সহযোগী হিসেবে রিয়াজ উদ্দিন ছোটন (৩৩) নামে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজারকে আটক ও পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বুধবার সকালে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে যান ওই নারী। বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ঘুরতে গেলে তারা স্বামীর সঙ্গে অপরিচিত এক যুবকের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে ওই নারীর ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওই নারীকে তুলে নিয়ে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে ধর্ষণ করে তিন যুবক।
এরপর জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নিয়েও আরেক দফা ধর্ষণ করা হয়। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
পরে ওই নারী জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ তাকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। পরে র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এসে উদ্ধার করে ওই নারীকে।
ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, “৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তার নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি আমি তাকে বলি। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে আমি হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ড থেকে র্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন “
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিচ্ছি।”
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, “৯৯৯-এ সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম মাঠে থাকে। এমন তো হওয়ার কথা নয়। যদি কেউ দায়িত্বে অবহেলা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”