• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬
কক্সবাজারে গৃহবধূ ধর্ষণ

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ২ জন শনাক্ত


কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৩, ২০২১, ০২:২৫ পিএম
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ২ জন শনাক্ত

কক্সবাজারে এক নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করেছে র‍্যাব। এছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত দুইজনকে শনাক্ত করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১৫-এর কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান।

মেজর মেহেদী হাসান জানান, জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তিনি ঘটনার পর পলাতক ছিলেন। এই হোটেল থেকেই ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস জানান, ওই নারীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় দুজনকে শনাক্ত করার কথা জানায় র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, ওই দুই যুবক হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার জয়া। আরেকজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

র‍্যাব আরো জানায়, আশিক চার মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। তিনি ছিনতাই, মাদকসহ একাধিক মামলার আসামি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর আশিকের নেতৃত্বে কয়েকজন এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে সবকিছু ছিনিয়ে নেন। এই মামলায় তিনি জেলে ছিলেন। চার মাস আগে জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা যায়। আশিক এলাকায় মাদক কারবার ও যৌনকর্মী সরবরাহের কাজ করে। জয়া তার অন্যতম সহযোগী।

কক্সবাজার র‍্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই নারী মামলা করবেন। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

বুধবার সকালে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে যান ওই নারী। বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ঘুরতে গেলে তারা স্বামীর সঙ্গে অপরিচিত এক যুবকের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে ওই নারীর ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওই নারীকে তুলে নিয়ে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে ধর্ষণ করে তিন যুবক।

এরপর জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নিয়েও আরেক দফা ধর্ষণ করা হয়। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।

পরে ওই নারী জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ তাকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। পরে র‍্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এসে উদ্ধার করে ওই নারীকে। 

ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, “৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তার নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি আমি তাকে বলি। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে আমি হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ড থেকে র‍্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন “

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিচ্ছি।”

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, “৯৯৯-এ সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম মাঠে থাকে। এমন তো হওয়ার কথা নয়। যদি কেউ দায়িত্বে অবহেলা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!