খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামে যমজ শিশুসন্তান হত্যার অভিযোগে মা কানিজ ফাতেমা কনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের কনা বেগমের বাবার বাড়ির পুকুর থেকে দুই যমজ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। আড়াই মাস বয়সী দুই যমজ শিশুর নাম মনি ও মুক্তা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তেরখাদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল হক বলেন, “চার বছর আগে তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের কুশলা গ্রামের খোরশেদের কন্যার সাথে মোল্লারহাট উপজেলার মাতারচর গ্রামের মোল্লা আবু বক্কারের ছেলে মাসুম বিল্লাহর বিয়ে হয়। বিয়ের তিন বছরের মাথায় তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর কনাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সন্তান হওয়ার পর থেকে গত দুমাস ১১ দিন বাবার বাড়িতে অবস্থান করেন তিনি। সন্তান দুটি প্রচুর কান্নাকাটি করত। এ বিষয়ে কনা স্বামীর সাথে যোগাযোগ করেন। বলা হয়, আগামী মাসে তাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হবে। কিন্তু এর আগে যমজ শিশুকে হত্যা করেন কনা।”
এসআই এনামুল হক আরও জানান, মনি-মুক্তা রাতে অস্বাভাবিক জ্বালাতন করছিল। প্রথমে কনা তাদের দুধ খাওয়ায়। এরপরও তারা থামছিল না। রাত আড়াইটার দিকে বাচ্চা দুটির মুখে চড় মারেন। পরে মুখে বালিশচাপা দিয়ে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর নাটক সাজানোর জন্য বাচ্চা দুটিকে পুকুরে ফেলে দেন। শিশুদের পুকুরে ফেলে দেওয়ার পর ঘরের দরজা খুলে ঘুমিয়ে পড়েন কনা। যেন বিষয়টি কেউ ঠিক না পায়। রাত ৪টার দিকে ঘুম থেকে উঠে চিৎকার করেন। পাড়ার লোকজন তাদের বাড়িতে জড়ো হয়। এরপর সবাই শিশুদের খোঁজ নিতে থাকেন। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লাশ দু’টির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এরপর ওই পরিবারের প্রতিটি সদস্যর ওপর নজর রাখেন এ কর্মকর্তা। বিকেলে কনা, তার বাবা ও মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কনা অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন এবং কনা যমজ শিশু হত্যার কারণ পুলিশের নিকট ব্যাখ্যা করেন। পরে অপর দু’জনকে ছেড়ে দিয়ে কনাকে আটক রাখেন।