গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া আছে ভরপুর। বিক্রিও হচ্ছে বেশ। চোখে-মুখে স্বস্তির ঝিলিক চুয়াডাঙ্গার খামারিদের। এবার লকডাউনে কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছিল এ জেলা পশু পালনকারীরা। অনেকেই তাদের পশু বিশেষ করে গরু নিয়ে ছুটেছেন রাজধানী ঢাকার কোরবানির হাটগুলোতে।
ঢাকায় ভালো দামে গরু বেচে খুশি খামারিরা। জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার গড়চাঁপড়া গ্রামের খামারি নাজমুল হোসেন তিনটি গরু নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন। রাজধানীর মেরুল বাড্ডা হাটে তিনটি গরু বিক্রি করেছেন সাড়ে দশ লাখ টাকায়। ভালো দাম পেয়ে খুশি নাজমুল।
জেলার জীবননগর উপজেলার লক্ষ্মীপুরের বড় খামারি বাশার মিয়া। তার খামারে ৬২টি কোরবানি উপযোগী বড় বড় গরু রয়েছে। এবার ৪৫টি গরু নিয়ে ঢাকার গাবতলী হাটে গিয়েছেন।
দামুড়হুদা উপজেলার দক্ষিণ চাঁদপুরের মাসুদুর রহমানের খামারে আছে বড় বড় ১৬টি গরু। মাসদুর রহমান জানান, এখনও তেমন ব্যাপারি ভেড়েনি তারা খামারে। কষ্ট হলেও এখন হাটে তুলবেন গরুগুলো।
গত ৬ জুলাই লকডাউনে অনলাইন পশুহাটের উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক। মোটামুটি সাড়া মিলেছে ডিজিটাল পশুহাটে। প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার গরু-ছাগল অনলাইন পশুহাটে আপ হয়েছে। তবে বেচাকেনা কত হয়েছে তা এখনও নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। গত বছর সাড়ে চার হাজার পশু অনলাইন হাটে বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে জেলার খামারি ও এলাকাবাসির দাবির মুখে জেলায় চার উপজেলার চারটি বড় পশুহাটসহ ৭/৮ টি হাট স্বাস্থ্য বিধি মেনে বসানোর অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসব হাটে পশু বিক্রি হচ্ছে মোটামুটি। করোনার সংকটে এবার কোরবানি করা ব্যক্তির সংখ্যা অনেক কম। তাই পশু বিক্রিও তুলনামূলক কম বলে মনে করছেন হাট সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, পশু বিক্রি নিয়ে চিন্তিত হবার কারণ নেই খামারিদের। ঈদের পরও পশুর ভালো দাম পাবেন তারা। যেসব পশু অবিক্রিত থাকবে সেগুলোর স্বাস্থ্য সেবাসহ রক্ষণাবেক্ষণে খামারিদের পাশে থাকবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, অনলাইন পশুহাট চালু রয়েছে। এ ছাড়াও খামারি অর্থাৎ পশুপালনকারীদের কথা মাথায় রেখে জেলার করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে হাটগুলো চালু করা হয়েছে। এবার জেলার হাটগুলোতে ভারতীয় গরু নেই। সুতরাং আশা করি এ জেলায় পালন করা কোরবানি উপযুক্ত সব গরু-ছাগল ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যাবে। খামারিরাও ভালো দাম পাবেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যনুযায়ী, এবার চুয়াডাঙ্গা জেলায় কোরবানি উপযোগী পশু রয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ৯৫৫টি। এর মধ্যে গরু ২৯ হাজার ৭৫০টি, মহিষ ১৮৯টি, ছাগল ৮২ হাজার ২৩৬টি, ভেড়া ৭৮০টি। এ বছর চুয়াডাঙ্গায় কোরবানি পশুর চাহিদা ৭৫ হাজার তিনটি। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫৫টি।