• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাজগীর


কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২২, ০৯:৫১ এএম
মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাজগীর

মায়ের স্বপ্ন ছিল তাজগীরকে চিকিৎসক বানাবেন। কিন্তু স্বপ্নপূরণের আগেই মারা গেছেন মা। এ অবস্থায় ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করে মৃত মায়ের স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়েছেন তিনি। ভ্যানগাড়িতে গাছের চারা বিক্রি করেছেন। পাশাপাশি টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছেন। অনেক সংগ্রাম করে এবার খুলনা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু স্বপ্ন নাগালে এলেও ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তাজগীর।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের খুন্তা গ্রামের নানার বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন তাজগীর। লেখাপড়া চালিয়ে যেতে তাকে স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষকরা সহায়তা করেছেন। লাকসাম উপজেলার বরইগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে  সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫, জ্যোতিঃপাল মহাথের বৌদ্ধ অনাথ আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় এ গ্রেড, একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৪.৯৪ এবং লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পান। 

তাজগীর হোসেন বলেন, “মা বলতেন ভিক্ষা করে হলেও পড়াবেন। আমাকে চিকিৎসক বানাবেন। কিন্তু হলো না। অনেক আগে মা আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিরাতে মায়ের কথা মনে হলে কান্না করি। এখন মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। মা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। এখন বড় দুশ্চিন্তা হলো, কীভাবে ভর্তি হবো। এ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়েছি। টিউশনি ও রাস্তায় গাছের চারা বিক্রি করেছি।”

তাজগীর আরও বলেন, “আমরা দুই ভাই নানার বাড়িতে থাকি। অর্থাভাবে ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া বন্ধ। অপর দুই ভাইকে নিয়ে বাবা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের কইয়া গ্রামে থাকেন। বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো না। নানার বাড়িতে থাকলেও মামাদের আর্থিক অবস্থা করুণ। মামারা ভ্যানগাড়ি চালিয়ে সংসার চালান। তাই এখন মেডিকেলে ভর্তি, বই ও অন্যান্য খরচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা চাই।”

লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিতা সফিনাজ বলেন, “তাজগীরের সংগ্রামী জীবন আমাদের মুগ্ধ করে। তার জন্য অনেক শুভকামনা। ছেলেটি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তাকে সহযোগিতা করা দরকার। আমরা চেষ্টা করছি, তাকে সহায়তা করার।”

লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম বলেন, “আমি তার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি বলেছেন তাকে নিয়ে যেতে। একটা ব্যবস্থা করবেন জেলা প্রশাসক। আশা করছি, তার মেডিকেলে ভর্তিতে সমস্যা হবে না।”

Link copied!