স্বামীর পরকীয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। মাসখানেক আগে রাগ করে বাবার বাড়িতেও চলে যান পিয়া মণ্ডল। স্বামীর ভালো হয়ে যাওয়ার আশ্বাসে ফিরে আসেন। কিন্তু কথা রাখেননি স্বামী প্রভাষক কণার মণ্ডল। তাই স্বামীর ওপর অভিমান করে মেয়েকে রশিতে ঝুলিয়ে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেন অন্তঃসত্ত্বা পিয়া মণ্ডল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এটি নিশ্চিত হয়েছে।
শনিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় যশোরের মনিরামপুরের কুলটিয়া গ্রামে পিয়া মণ্ডল (২২) ও তার মেয়ে আদ্রিতা (৩) মণ্ডলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে পিয়ার স্বামী কণার মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মনিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে।
রোববার (৮ আগস্ট) মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে আমরা নিশ্চিত এটি আত্মহত্যা। পিয়া মণ্ডল আত্মহত্যার আগে তার সন্তানকে হত্যা করে। এই ঘটনার নেপথ্যে স্বামীর পরকীয়া নিয়ে পারিবারিক কলহ। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী কণার মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া ও সার্বিক তদন্তের পর আত্মহত্যার পুরো রহস্য উন্মোচন হবে।
জানা যায়, চার বছর আগে পাশের উপজেলা অভয়নগর থানার দত্তগাতী গ্রামের ভগীরথ মণ্ডলের মেয়ে পিয়াকে বিয়ে করেন কণার মণ্ডল। বিয়ের পর তারা কুলটিয়া বাজারের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তবে কণার মণ্ডলের পরকীয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। স্বামীর ওপর অভিমান করে অন্তঃসত্ত্বা পিয়া মণ্ডল মেয়ে আদ্রিতা শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে স্বজনদের ধারণা।
পিয়া মণ্ডলের মা শিপ্রা মণ্ডল বলেন, “জামাই কণাকে বহুবার ভালো হতে বলেছে, কথা শোনেনি। মেয়েটাও তাকে (কণার) বিপথ থেকে ফিরে আসতে বললেই মারধর করত।”
পিয়া মণ্ডলের ভাই চন্দন মণ্ডল বলেন, “এক প্রতিবেশীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন কণার মণ্ডল। এ নিয়ে বোন পিয়ার সঙ্গে কণার মণ্ডলের কলহ চলছিল। শুধু এখানে নয়, কণার মণ্ডলের একাধিক পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে।”
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় জানান, কণার মণ্ডল মশিয়াহাটি কলেজের প্রভাষক। তারা কুলটিয়া গ্রামের ফাল্গুন মণ্ডলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শনিবার ভাড়া বাড়ির রান্নাঘর থেকে দুই দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধার করা।