• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মামির নৃশংসতার শিকার ৭ বছরের ফারহান


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২২, ০১:৩০ পিএম
মামির নৃশংসতার শিকার ৭ বছরের ফারহান

সাতক্ষীরার বালিথায় শিশু আলিফ ফরহাদকে নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগে মামি রানী বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। 

সোমবার (১৪ মার্জ) সন্ধ্যায় দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে দুপুরে চরবালিথা এলাকায় মরিচ্চাপ নদীর পাড় থেকে ক্ষতবিক্ষত ওই শিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। 

আটক রানী বেগম (২২) চরবালিথা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী। তারা দু জনই নির্যাতিত শিশুটির আপন মামা ও মামী। 

আহত শিশুটির নাম আলিফ ফরহাদ (৭)। সে চরবালিথা গ্রামের মঈনুদ্দীন সরদারের ছেলে। 

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, পাঁচ বছরের শিশু আলিফ ফরহাদ মামা আশরাফুল ইসলামের বাড়িতে থাকত। মা না থাকায় মামি রানী বেগমকে মা বলে ডাকত শিশুটি। দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে মামি রানী বেগম শিশু আলিফকে বসতঘরের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করেন। এছাড়া শিশুটির চোখের আশপাশে মুখমণ্ডল, নাক, মুখ, ঠোঁট কেটে রক্তাক্ত করেন।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে আরও জানানো হয়, শিশু আলিফ মৃত্যুবরণ করেছে মনে করে রানী বেগম শিশুটিকে বাড়ির পাশে পানিবিহীন পুকুরের মধ্যে ফেলে রেখে যান।

ফরহাদের ছোট মামা আশিকুজ্জামান বলেন, “আমি মরিচ্চাপ নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় উপুড় হয়ে তাকে পড়ে থাকতে দেখি। পরে চিত করে দিয়েই তাকে চিনতে পারি সে আমার ভাগ্নে। তার চোখে ধারালো কিছু দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আর ঠোঁট কেটে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। তৎক্ষণাৎ তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।” 

শিশুটির বাবা মঈনুদ্দীন সরদার বলেন, “আমার প্রথম স্ত্রী শারমীন সুলতানা মারা যাওয়ার পরে ফারহান একই গ্রামে তার নানি সকিনা খাতুনের কাছে থাকত। সৎমায়ের অত্যাচার ছেলেটাকে যেন সইতে না হয়, তার জন্য নানির কাছে রাখা হয়েছিল।”
 
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক পারভীন আক্তার বলেন, “আমরা আশঙ্কা করছি, ফারহানের দুটো চোখই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার ঠোঁট, গলা ও গায়ের কয়েক জায়গায় কাটা দাগ রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য জুয়েল হোসেন জানান, স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মামি অত্যাচার করে ওই শিশুকে নদীর বেড়িবাঁধে ফেলে রেখেছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুটির মামি রানী বেগমকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি দেবহাটা থানার মধ্যে, তারা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

Link copied!