সাভারে দুটি কারখানায় অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে চিটাগুড়, আটা, চিনি, রং ও কেমিক্যালের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে হরেক রকমের গুড়। প্রশাসনের চোখের আড়ালে গড়ে ওঠা এসব কারখানার গুড় পাইকারি ও খুচরা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের হাটবাজারে।
সরেজমিন দেখা যায়, সাভার পৌর এলাকার নামা বাজারে রুপা এন্টারপ্রাইজ ও আশুলিয়ার শিমুলিয়ায় ইউনিয়নে রাঙামাটি মহল্লায় বুলবুলের টাইলস কারখানায় চিটানালী, আটা, চিনি, কেমিক্যাল, ময়দা ও রং দিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব গুড় তৈরি হচ্ছে। যে গুড় তৈরি করা হয়, তা মানুষের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
নামা বাজারের গুড় ব্যবসায়ী মৃদুল সাহা জানান, চিটাগুড়, ময়দা ও চিনির সংমিশ্রণে রুপা এন্টারপ্রাইজে গুড় তৈরি করা হয়। ভেজার গুড় সাভারে তৈরি হয় বলে অন্য জায়গার গুড় বিক্রি করি।
অপর গুড় ব্যবসায়ী দুলাল দাস জানান, ৩২ বছর ধরে সাভারে গুড় বিক্রি করি। সাভারে রুপা এন্টারপ্রাইজের গুড় চলে না। তাই কুষ্টিয়া এবং দেশের অন্য জায়গায় গুড় বিক্রি করা হয় সাভার বাজারে।
রুপা এন্টারপ্রাইজের মালিক গৌতম সাহা বলেন, “আমরা মূলত গো-খাদ্য উৎপাদন করি। আমরা অন্য কোনো খাদ্য উৎপাদন করি না।”
তবে গুড় উৎপাদনের ভিডিও রয়েছে বলে জানালে তিনি (গৌতম) বিষয়টি এড়িয়ে যান। একইভাবে বুলবুলের টাইলস কারখানার ভেতরে গুড় তৈরি করেন নিরঞ্জন। গুড় উৎপাদনের ভিডিও রয়েছে বলে জানালে নিরঞ্জনও বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা খাবার মানবদেহে প্রবেশ করলে ক্যানসার হতে পারে। সেই সঙ্গে মানুষের অরগান ড্যামেজ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়াও শিশুদের জন্য এমন খাবার মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম জানান, নিরাপদ খাদ্য আইনের একাধিক ধারায় বিষাক্ত দ্রব্যের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন, ভেজাল খাদ্য ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনায় খাদ্য উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনেও বিষাক্ত দ্রব্য ব্যবহারের মাধ্যমে খাবার উৎপাদন করা হলে তিন বছরের কারাদণ্ড কিংবা দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।