হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর দিনাজপুর শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান পলাশ।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁশেরহাট এলাকার ব্লুমুন ছাত্রাবাস থেকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, প্রেমঘটিত বিষয়ে আত্মহত্যা করেছেন পলাশ। পলাশের এমন মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড প্রসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন পলাশ৷ তার বাড়ি গাজীপুর জেলায় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ব্লুমুন আবাসিক ছাত্রাবাসের মালিক রেজাউল ইসলাম বলেন, “পাঁচতলা ছাত্রাবাসটির দ্বিতীয় তলায় থাকতেন পলাশ। রাত প্রায় ১২টার সময় এক মেয়ে ফোনে জানায় যে মেসে পলাশ নামের একজন থাকে। তার বাসা থেকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু সে ফোন ধরছে না। এর কিছুক্ষণ পরে মেসের অপর এক ছাত্র জানায় পলাশ গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দিয়েছে। এ সময় তার কক্ষের দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থায় পলাশের মরদেহ পাওয়া যায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে রাত দেড়টার সময় পলাশের লাশ পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।
ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে রাতেই গাজীপুর থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন আব্দুস সাত্তার। মুঠোফোনে তিনি বলেন, “তিনি গাজীপুরে সমরাস্ত্র কারখানায় কর্মরত আছেন। এক ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। এর আগে গত রোববার বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান পলাশ। শুক্রবার রাত ৯টায় ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয় বাবার। ভালোমন্দ খোঁজ নিয়েছেন। রাত সাড়ে ১২টার সময় জানতে পারি ছেলে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মামুনুর রশিদ বলেন, “শুক্রবার মধ্যরাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীর মরদেহ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে পুলিশকে খবর দিই।”
তবে পলাশের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে কোনো বিষয়ে প্রচণ্ড অভিমান করে এ ঘটনা ঘটাতে পারেন পলাশ বলে জানান তিনি।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মরদেহ উদ্ধার করে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন।
মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, “মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সঠিক কারণ জানা যাবে। এছাড়া নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”