উজানের পাহাড়ি ঢল আর গত কয়েকদিনের বর্ষণে আবারও বেড়েছে তিস্তার পানি। এতে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় চরাঞ্চলসহ নিন্মাঞ্চলের আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, সোমবার সকালে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যায়। মঙ্গলবারও (১৭ আগস্ট) নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে বইছে। এতে উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ ও নোহালী ইউনিয়নের ১২ গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানিসহ ১০টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম সোমবার নোহালী ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবারও (১৭ আগস্ট) নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে বইছে।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের শংকরদহ, চরইচলী, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, চর মটুকপুর, বিনবিনা এলাকায় দুই হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তার ইউনিয়নে এক হাজার ৩০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী জানান, তার ইউনিয়নের চারটি চরে এক হাজার এবং নোহালী ইউনিয়নে ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, কয়েকটি চরের বেশকিছু পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। তাদের জন্য কোলকোন্দ ইউনিয়নে ৬, লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে তিন ও নোহালী ইউনিয়নে এক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে তিস্তায় পানি বাড়ার কারণে নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। এতে হুমকির মুখে রয়েছে বিনবিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদ্রাসা, ঈদগাহ, ডান তীর রক্ষা বাঁধ, পোস্ট অফিসসহ শত শত ঘর-বাড়ি।
এ ব্যাপারে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শহিদুর রহমান জানান, ভাঙন ঠেকাতে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০০ ব্যাগ ধসে যাওয়া ব্লক-পিচিং এলাকায় ফেলা হয়েছে। বিনবিনা-তুষভান্ডার সড়কেও জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকিগুলো ফেলা সম্ভব হলে ভাঙন ঠেকানো যাবে।