‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ নামে খ্যাত পারুল বেগম নামের এক নারীর খামারে বেড়ে ওঠা জেলার সবচেয়ে বড় গরুটি বিক্রি হয়নি ঈদে। খামারে পালন করা সাড়ে তিন বছরের লালিত স্বপ্ন বেঁচতে গিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন পারুল বেগম। বাজারে ক্রেতার অভাব ও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ অবশেষে রয়ে গেল নিজের খামারে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে আঞ্চলিক বাজারে বাইরের পাইকার না থাকায় কোরবানি ঈদে গরুর দাম কম বলে অভিমত পারুলের।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপাশা ইউনিয়নের পাঠকপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর স্ত্রী পারুল বেগমের ৮টি গরু নিয়ে একটি ছোট খামার করেন। তার এ ছোট খামারে বেড়ে ওঠা একটি গরু নাম রেখেছেন ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ অর্থাৎ ‘কুড়িগ্রামের রাজা’। শুধু নামেই রাজা নয়, ১ হাজার কেজি ওজনের এই রাজার দামও হাঁকাচ্ছিলেন ১০ লাখ টাকা। প্রতিদিনই ‘কুড়িগ্রামের রাজা’কে দেখতে, কেউবা কিনতে লোকজন ভিড় করলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
পারুল বেগম বলেন, “প্রতিদিন ১০ কেজি দানাদার খাদ্যসহ খড় ও কাঁচা ঘাস খাওয়াতে দিনে সাড়ে ৩শ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। সেই হিসাবে ১ হাজার কেজি ওজনের ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’-এর দাম ১০ লাখ টাকা চেয়েছি। দু-একজন ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা বললেও কাঙ্ক্ষিত দাম মনে হয়নি। ভালো দাম না পাওয়ায় আমরা গরুটি বিক্রি করতে পারলাম না।”
যাত্রাপুর হাটের গরু ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, “এবার কোরবানি ঈদে ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা অনেকটা বেশি ছিল। কোরবানির হাটে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা গরু বেশি ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় অনেকেই সেগুলো বিক্রি করতে না পেরে বাড়ি ফিরেয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন।”
কুড়িগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামে ছোট-বড় গরুর খামারের সংখ্যা ১ হাজার ৭০টি। আর গরুর সংখ্যা প্রায় ৯ লাখেরও বেশি। এখানকার চাহিদা ছিল ৯০ হাজার পশু। এদিকে প্রস্তুত ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার পশু।
তাদের তথ্যমতে, রাজারহাট উপজেলার ‘কিং অফ কুড়িগ্রাম’ গরুটি ছিল জেলার সবচেয়ে বড় গরু। বাজারে বড় গরুর চাহিদা ভালো থাকলে ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ গরুটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারতো খামারি।