• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বরিশালের ‘তাজমহল’খ্যাত মন্দির এখন স্মৃতি


বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২, ০৯:২৪ এএম
বরিশালের ‘তাজমহল’খ্যাত মন্দির এখন স্মৃতি

ইতিহাস, ঐতিহ্যের স্মৃতিবিজড়িত সমাধমন্দির বরিশালের আগৈলঝাড়ার ‘তাজমহল’ এখন ধ্বংসের পথে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারা তাজমহলখ্যাত এ স্থাপত্যের নানা অলংকরণ ভেঙে ফেলে। এ ছাড়া নির্মাণের পর থেকে অদ্যাবধি সংস্কারের অভাবে বর্তমানে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে তাজমহলটি।

সূত্র মতে, জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামে পারিবারিকভাবে নির্মিত তাজমহল স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা পরিদর্শন করে সংস্কারের আশ্বাস দিলেও দীর্ঘদিনে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়ক থেকে তাজমহল পর্যন্ত ইট সলিংয়ের রাস্তাটি ভেঙে একাকার হয়ে গেলেও তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। অতীতে প্রতিবছর তাজমহলের পাশে মেলার আয়োজন করা হলেও পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।

আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে নির্মিত আগৈলঝাড়ার তাজমহল সম্পর্কে ইতিহাসবিদ শিকদার রেজাউল করিম বলেন, ৮২ বছর আগে বাংলা ১৩৪৭ সালে জমিদার কামিনী গুপ্তের মেজ ছেলে ডা. শরৎ চন্দ্র গুপ্ত তার পূর্বপুরুষদের পারিবারিক ঐতিহ্যের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজ বাড়ির পুকুরপাড়ে আগ্রার তাজমহলের অনুকরণে একটি তাজমহল নির্মাণ করেন। সাতটি মূল স্তম্ভের ওপর বর্গাকার সমাধিমন্দিরের নামকরণ করা হয় কালীতারা নিত্যানন্দ স্মৃতি মন্দির। নিপুণ নির্মাণশৈলীর নৈপুণ্যের কারণে এ অঞ্চলের মানুষ ওই স্মৃতি মন্দিরটিকে ‘তাজমহল’ নামেই আখ্যায়িত করেছে। সমাধিটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যেদিক থেকেই দেখা হোক না কেন দেখতে ঠিক তাজমহলের মতো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তাজমহলের গায়ে খোদাই করে লেখা রয়েছে—আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের প্রভাবশালী জমিদার কামিনী গুপ্তের ছেলে ডা. শরৎ চন্দ্র গুপ্ত কর্তৃক তার মাতা কালীতারাসহ বংশের যশোঃ প্রসাদাৎ ভুবি প্রত্য ভূতভুবি, দিষ্টা দাশগুপ্ত, পভুব সুন্দানী। তাজমহলের পশ্চিমপাশে জ্যোতি কালী মোহন দাশগুপ্ত, উত্তরে পিতৃসম সত্যভামা গুপ্তাসহ তিনটি সমাধি রয়েছে। চারপাশে রয়েছে চারটি মিনার যা তাজমহলকে আরও মনোরম করেছে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী প্রবীর বিশ্বাস ননী বলেন, ওই জমিদারের বংশধররা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছেন। তিনি আরও জানান, এ স্থাপত্যকীর্তিটি যেমন রক্ষণাবেক্ষণ করা দরকার তেমনি জমিদারের সমস্ত সম্পত্তি উদ্ধার করা হলে এখানে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাশেম বলেন, এরকম একটি প্রাচীন নিদর্শনের স্থাপত্য শিল্পকর্ম রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে এটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। তাই আগৈলঝাড়ার তাজমহল খ্যাত স্থাপনাটি সংস্কার ও সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চাওয়া হবে।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!