• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

প্রেম নিয়ে বিরোধে বন্ধুকে হত্যা, একজনের যাবজ্জীবন


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২২, ০২:৪৪ পিএম
প্রেম নিয়ে বিরোধে বন্ধুকে হত্যা, একজনের যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বিরোধের জেরে বন্ধুকে হত্যার দায়ে মোবাশ্বির হোসেন (২৩) নামের এক কলেজছাত্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত মোবাশ্বির হোসেন আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের আব্দুল মজিদ মোড়লের ছেলে ও আশাশুনি ডিগ্রি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্তমানে তিনি পলাতক।

মামলার বিবরণে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের শঙ্কর সরকারের ছেলে চন্দ্রশেখর সরকার ও একই গ্রামের মোবাশ্বির হোসেন ছোটবেলা থেকে একই সঙ্গে পড়ালেখা করতেন। শোভনালী নলকুড়া বিলে তাদের দুজনেরই পৈতৃক একটি মাছের ঘের রয়েছে। এইসএসসি পাস করার পর চন্দ্রশেখর সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ও মোবাশ্বির হোসেন আশাশুনি ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। এদিকে মোবাশ্বিরের সঙ্গে একই গ্রামের ইন্দ্রাণী ঘোষ ওরফে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি চন্দ্রশেখর। এ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর ধারাবাহিকতায় চন্দ্রশেখরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মোবাশ্বির। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর রাতে চন্দ্রশেখরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন মোবাশ্বির। 

পরদিন ওই ঘের থেকে চন্দ্রশেখরের মরদেহ উদ্ধার করে আশাশুনি থানা-পুলিশ। এরপর ২০ অক্টোবর নিহতের বাবা শঙ্কর সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।

পুলিশ রাতেই সাতক্ষীরা শহরের একটি বাসা থেকে মোবাশ্বিরকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। পাপিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ঘিরে বন্ধু চন্দ্রশেখরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মোবাশ্বির। পরে আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে যায় তিনি। 

এদিকে, গত বছরের ৩১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর আসামি মোবাশ্বির হোসেনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

মামলার নথি ও ১৪ জন সাক্ষীর জেরা-জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে মোবাশ্বিরের বিরুদ্ধে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং বয়স বিবেচনায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

মামলার রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নিহতের বাবা শঙ্কর সরকার জানান, তার ছেলের হত্যাকারী মোবাশ্বিরের যাবজ্জীবনের রায়ে তিনি খুশি নন। তবে উচ্চ আদালতে তিনি আপিল করবেন না বলে জানান।

Link copied!