প্রতিশ্রুতিতে আছে, বাস্তবে নেই ব্রিজ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কালিকাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে আত্রাই নদীর শাখা নদী। আর দুই পাড়ে প্রায় ১০-১২ গ্ৰামের বাসিন্দাদের বসবাস।

এছাড়া এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের পাশাপাশি অন্য উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারাও এই নদীর উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু নদীটির উপরে নেই কোনো ব্রিজ, আছে শুধু ছয়টি পিলার। এই ছয়টি পিলারের উপর দিয়ে একটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা।

তবে দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর কাঠের তৈরি ব্রিজটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই পারাপারের সময় প্রতিনিয়ত ঘটে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। এতে করে বিপাকে পড়েছে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সহ সাধারণ মানুষেরা। এদিকে এই ব্রিজ তৈরির প্রতিশ্রুতি মিলেছে বহুবার। কিন্তু প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও ব্রিজ নির্মাণের পিলারগুলো ছাড়া আর সেই ব্রিজের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখেনি এলাকার মানুষগুলো। তাই এবার প্রতিশ্রুতি নয়, দ্রুত একটি ব্রিজ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ধনেশ্বর গ্রামের মো. মোবারক প্রামাণিক বলেন, “এই ব্রিজটি নির্মাণ হলে ইউনিয়নের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হবে। একইসঙ্গে মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটবে।”

ভ্যানচালক ইমাজ উদ্দিন বলেন, “এই কাঠের তৈরি ভাঙা ব্রিজ দিয়ে আমাদের গাড়ি নিয়ে চলাচল করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। আর বন্যা আসলে তো সবকিছুই ডুবে যায়, তখন কোনোভাবেই নৌকা ছাড়া চলাচল করা যায় না। তাই দ্রুত একটি ব্রিজ করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।”

এলাকার আরেক বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান বলেন, “নির্বাচন এলেই এমপি-চেয়ারম্যানরা বলেন ব্রিজ করে দেবেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত ব্রিজের কোনো হদিস নেই। কবে হবে তার‌ও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারেন না। অনেক বছর আগে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ছয়টি পিলার তৈরি করেছিল, তাও প্রায় নষ্টের পথে।”

তাই মানুষের এই দুর্ভোগ লাঘবে অনতিবিলম্বে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাজমুল হক নাদিম বলেন, “এই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে ৮-১০ গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে। এখানে একটি ব্রিজ হওয়া অতীব জরুরি। আগের এমপি মহোদয় এখানে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু তার মৃত্যুর কারণে ব্রিজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আমি বর্তমান এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি আশা করছি খুব দ্রুতই ব্রিজটি নির্মাণ হবে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. জুনায়েদ আলম বলেন, “এখানকার বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে এখন আমি এ বিষয়ে জানলাম। ব্রিজ নির্মাণে বরাদ্দ আসলে অবশ্য সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।”