নেত্রকোনার জন্য বিরল এক সম্মান এনে দিলেন সাবেক জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে ‘হাওড়ে পতিত জমিতে কৃষি সংস্কৃতির নতুন চেতনা’ শীর্ষক উদ্যোগের জন্য দলগতভাবে পদক পেয়েছেন নেত্রকোনা জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক, উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব কাজী মো. আবদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক হাবিবুর রহমান, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম, খালিয়াজুরীর সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ হাসান খান এবং উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান।
জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক- ২০২২’ প্রদান উপলক্ষ্যে শনিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রশাসনের ২৭ জন কর্মকর্তা ও তিনটি সরকারি দপ্তরকে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘হাওড়ে পতিত জমিতে কৃষি সংস্কৃতির নতুন চেতনা’ শিরোনামে পতিত জমিতে কৃষি উৎপাদনের সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে এই বিশেষ উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়।
নেত্রকোনার হাওড় অঞ্চলে ২০২০-২১ অর্থবছরে আড়াই হাজার একর পতিত জমিতে রবি শস্যের আবাদ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষ্যে এক ইঞ্চি পতিত জমিও অনাবাদী থাকবে না’ বলে ঘোষণা দেন। তাঁর নির্দেশনা বাস্তবায়নে হাওড় অঞ্চলে দীর্ঘদিনের পতিত হাজার হাজার একর জমি প্রথমবারের মত আবাদের আওতায় আনা হয়। প্রান্তিক কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে রবিশস্য উৎপাদনে নতুন ধারার সৃষ্টি হয়।
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব হ্রাস করা, খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করা, কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি ও প্রান্তিক অঞ্চলের নারী-কর্মীকে উৎপাদনমুখী কাজে সম্পৃক্ত করা, গ্রামীণ কৃষির বাণিজ্যিকিকরণ ও কৃষিপণ্য বিপণনে কৃষকদের সহায়তা করাই ছিল এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য।
কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, বীজ, সার, প্রণোদনা ও পরামর্শের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে রবিশস্য সম্পর্কে নেত্রকোনার হাওড় এলাকার কৃষকদের ধারণা প্রদান ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়। এতেই আসে সাফল্য। নতুন এই উদ্যোগের ফলে কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি। অনাবাদি জমিতে মিষ্টি কুমড়া, শসা, বাদাম, আলু, সরিষাসহ নানা সবজি চাষ করে তারা এখন স্বাবলম্বী। উদ্যোগটির ফলে, ১০০ জন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে এবং ১২০০ জন বেকার যুবক কৃষক উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত হয়।
এ বিষয়ে নেত্রকোনার বর্তমান জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, “অর্থনৈতিক উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে ‘হাওড়ে পতিত জমিতে কৃষি সংস্কৃতির নতুন চেতনা’ শীর্ষক উদ্যোগের জন্য দলগতভাবে পদক পাওয়ায় আমরা উচ্ছ্বসিত। বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন।”
নেত্রকোনার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পালের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রকোনাবাসির জন্য অত্যন্ত গর্বের যে, নেত্রকোনা বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পেয়েছে। সাবেক জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমানের নেতৃত্বে এই বিরল অর্জন সম্ভব হয়েছে।”