চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নে মাদক বিক্রিতে বাঁধা প্রদান ও সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে সমর্থন না করায় প্রতিপক্ষের হামলায় তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে উপজেলার গোপালকান্দি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় মারাত্মক আহত রাকিব প্রধানের পিতা রানা আহাম্মেদ রফিক বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে বুধবার রাতেই মতলব উত্তর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে বাঁধা প্রদান ও সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে মো. মনির হোসেন ও জয়নাল আবেদীন মোল্লা উভয়ই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। সে নির্বাচনে আঘাতপ্রাপ্তকে (জয়নাল আবেদীন) সমর্থন করার অভিযোগ এনে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মনির হোসেনের সঙ্গে উপরোক্ত বাদী পক্ষের বিরোধ চলে আসছিল।
গত ১০ জুলাই ঘটনার প্রথম দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মো. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে মো. শরীফ, মেহেদী, মো. মনির হোসেন, মো. রাজিব, মো. শুভ, মো. শাওন, মো. ইব্রাহিম, মো. শাহ আলম, ও মো. জর্জ মিয়াসহ ১৫/২০ জনের সংঘবদ্ধ দল লোহার তৈরি ছেনা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাদীর ছেলে আঘাতপ্রাপ্ত মো. রাকিব প্রধানকে মারতে ফাঁদ পাতে। পরে বাড়ি আসার উদ্দেশে মুক্তিরকান্দি ভাণ্ডারীবাজারে পৌঁছা মাত্রই বিবাদীরা অতর্কিত এলোপাথারি হামলা চালায় রাকিবের ওপার। এতে তার দু-পায়ের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। শেষে অটো রিকসাযোগে বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন মিলে জোড়পূর্বক মুক্তিরকান্দি হাজী মার্কেটে নিয়ে তাকে আটকিয়ে রাখে।
খবরটি স্থানীয় মানুষজনের কানে পৌছা মাত্রই স্থানীয়দের সহায়তায় আহত রাকিবকে উদ্ধার করতে গেলে বিবাদীরা তাদের ওপরও আক্রমণ করে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ছেলেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে অবস্থান করে বাদী।
ঘটনার ২য় দিন বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় বাড়ি থেকে আহত বেলাল ও জয়নাল আবেদীন চা পানের উদ্দেশে ঘটনাস্থলে পৌছা মাত্রই সকল বিবাদীরা লাঠি-সোটা, দা, ছেনিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইউপি সদস্য মনির হোসেনের নির্দেশে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে উভয়ই মারাত্মকভাবে জখম হয়।
তাদের চিৎকারে আহত রাকিব এগিয়ে এলে বিবাদীরা তাকেও আঘাত করে। এ সময় বিবাদীরা আহতদের পকেটে থাকা নগদ অর্থ, ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, গলার চেইন ছিনিয়ে নেয়। এসময়ে হামালায় গোপালকান্দি গ্রামের রাকিব (২২), জয়নাল আবেদীন মোল্লা (৬৫) ও বিল্লাল (৫০) আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারমধ্যে আহত জয়নাল আবেদীনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ডা. আহসান হাবীব।
আহত রাকিব বলেন, “অভিযোগে উল্লেখিত আসামিদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের বিরোধ। তারা পুরো ইউনিয়নজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়।”
মতলব উত্তর থানার ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বলেন, “এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’