কুমিল্লায় প্রথমবারের মতো বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য স্বতন্ত্র বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতোলা গ্রামে স্কুলটি স্থাপন করা হয়েছে। ২৬ মার্চ স্কুলটির উদ্বোধন করা হবে। প্রথমবারের মতো স্কুল পেয়ে খুশি বেদে সম্প্রদায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজার। বাজার থেকে উত্তর দিকে ভিকতলা গ্রাম। এই গ্রামে স্থানীয়দের সাথে বসবাস করেন দেড় সহস্রাধিক বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ। মহাসড়ক পেরিয়ে ইলিয়টগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক পেরিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া সাধারণ স্কুলে অনেকে বেদে সম্প্রদায়ের সন্তানদের ভালো ভাবে গ্রহণ করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভিকতলা গ্রামের বেদে সম্প্রদায়ের সভাপতি হাজী ঝারু মিয়া জানান, তারা আগে নৌকায় বসবাস করতেন। ৮০-এর দশকের একটু জমি কিনে স্থায়ী হন। প্রথমে চার পরিবার আসে। এখন এখানে দুই শতাধিক পরিবার রয়েছে।
ভিকতলা ও পাশের নয়াকান্দি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। বেদে সম্প্রদায়ের জন্য জেলা প্রশাসক স্কুল করে দিয়েছেন। এতে তারা খুব খুশি। তিনি আরও বলেন, “কিছু মানুষ দরিদ্র। তাদের ঘরের ব্যবস্থা করে দিলে ভালো হয়।”
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, ভিকতলায় স্কুল প্রতিষ্ঠা হওয়ায় বেদেদের সাথে স্থানীয় শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হবে।
পাশের আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষাবিদ ও পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, ভিকতলা ও পাশের নয়াকান্দি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এই এলাকায় বিদ্যালয়টি আলো ছড়াবে। বিশেষ করে বেদে সম্প্রদায় আলোকিত হবে।
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম খান বলেন, “ভিকতলা স্কুলটিতে ৩০০ শিক্ষার্থী পড়তে পারবে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উদ্যোগে বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্যটি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তবে তাদের সঙ্গে স্থানীয় শিশুরাও পড়তে পারবে।”
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতলা, গোলাপের চরে ও মেঘনা উপজেলায় পিছিয়ে পড়া পরিবারের জন্য স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। তার মধ্যে দাউদকান্দি উপজেলার ভিকতলায় বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য জেলায় প্রথমবারের মতো স্কুল স্থাপন করা হয়েছে।