নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাকর্মী, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে জনসংযোগ করেছেন তিনি।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে বন্দরের ২৫ নং ওয়ার্ডের কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের সামনে থেকে এ জনসংযোগ শুরু হয়।
এ জনসংযোগে অংশগ্রহণকারীরা তৈমূর আলম খন্দকারের হাতি মার্কা পক্ষে ভোট চেয়ে মিছিল করেন এবং সবার কাছে দোয়া চান।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, “যেখানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- তৈমুর জেতার মতো লোক, সে উইনেবল (জয়যোগ্য) ক্যান্ডিডেট; সেখানে ঢাকা থেকে এসে সরকারি দলের বড় বড় নেতারা এমপিরা আমার বিরুদ্ধে অনেক বড় বড় কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা ভুলে গেছেন নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে চেনে। এখন প্রধানমন্ত্রীর কথা মানুষ বিশ্বাস করবে নাকি সরকারি দলের এমপি-মন্ত্রীদের কাহিনী বিশ্বাস করবে।”
তিনি বলেন, “২০১১ সালের নির্বাচনে আমি বসিনি, আমার দল বসে গিয়েছিল। তখন আমার কিছু করার ছিল না যেহেতু আমি দলের প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করেছি। এবার আমি জনগণের ফুলের মালা পাচ্ছি । জনগণ চারিদিক থেকে এসে ফুলের মালা দিচ্ছেন, ফুল ছিটিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন।”
গত ২৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পদ থেকেও তৈমুর আলমকে প্রত্যাহার করা হয়। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে । দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাকে জেলা বিএনপি আহ্বায়ক পদ থেকে সরানো হয়। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে মনিরুল ইসলাম রবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিএনপির নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে আছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, বিএনপির নির্যাতিত নেতাকর্মীরা মনে করে আমি তাদের আশ্রয়স্থল। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি খেয়েছি, পুলিশে মার খেয়েছি। কিন্তু তারপরও জনগণের পক্ষে কথা বলেছি। জনগণকে ছেড়ে যাইনি। নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে চেনে। গাছতলা থেকে বাইশতলা পর্যন্ত মানুষ আমাকে চেনে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের মন থেকে আমাকে সরাতে পারবে না। তিনি বলেন, আমি মানুষের প্রয়োজনে দলের বাইরে এসে এখানে নির্বাচন করছি। দলের লোকজনও আমার সাথে আছে কারণ তারা জানে আমার শরীরে সরকারি দলের গুলি আছে। আমি জানি আমার শরীরের অবস্থা কেমন যায়। আমাকে বারবার পুলিশ পিটিয়েছে তারা জানে। তাই আমার নেতাকর্মীরা আমাকে ছেড়ে যাননি। নেতাকর্মীরা জানেন কতবার আমি কারাগারে গিয়েছি কিন্তু আপস করিনি।
এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আকরাম, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির এহসান উদ্দিন আহমেদ, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির মাকসুদ হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন।এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি নুর উদ্দিন, সদর থানা ছাত্রদলের সভাপতি কাজী নাহিসুল ইসলাম সাদ্দামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, পেশাজীবী, নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে।