• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঠাকুরগাঁওয়ে পাটের বাম্পার ফলন


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২২, ০৮:৪৬ এএম
ঠাকুরগাঁওয়ে পাটের বাম্পার ফলন

সোনালি আঁশ পাটের সুদিন ফিরে এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে জেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। পাট চাষিরা ভাল দাম পাওয়ায় তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষি কাজের জন্য পরিচিত ঠাকুরগাঁওয়ে এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া দাম ভালো পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জেলায় ধান ও গমের পাশাপাশি চাষ হয়ে থাকে ভালো পাটেরও।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৮১২ হেক্টর। গত বছর আবাদ  হয়েছিল ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে। এবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২২২ হেক্টর। আর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া রাণীশংকৈল উপজেলায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর, পীরগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর এবং হরিপুর উপজেলায় ৮৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

জানা গেছে, এ অঞ্চলের কৃষকরা দেশি, তোষা, মেশতা ও উঁচু মাটিতে কেনাফ এইচ বি-৯৫ জাতের পাট আবাদ করেছেন। তবে উচ্চ ফলনশীল তোষা জাতের পাট চাষ হয়েছে বেশি।

গত বছর পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবার ব্যাপক সংখ্যক জমিতে পাট চাষ করে কৃষকেরা। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক জায়গায় কৃষকরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। এখন ক্ষেত থেকে পাট কর্তন, জাগ দেওয়া, পানিতে ডোবানো ও ধোয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। অনেকে পাট ধোয়া ও শুকানোর কাজেও ব্যস্ত। অনেকে পাট শুকিয়ে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রি করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবারে ভালো দামে পাট বেচা কেনা হচ্ছে বাজারে। বাজারে পাট বিক্রিও হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে। শুরুতে অবশ্য এ দাম ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে।

সরজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানো ও শুকানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। বর্ষার নদী-নালা, খাল-বিল ও ডোবাতে কিছুটা পানি থাকায় পাট জাগ দেওয়ার কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি কৃষকদের। তারা জানান, পাটের ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় ১২-১৪ মণ হয়ে থাকে এবং খারাপ আবাদ হলে হলে ৮-৯ মণের মতো হয়। এবার বিঘা প্রতি ১২-১৪ মন পাট আবাদ হয়েছে। কারো কারো এর চেয়েও বেশি আবাদ হয়েছে।  তবে কয়েক বছর আগে প্রতি মণ পাটের দাম ছিল এক হাজার ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। এ বছর প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা মণ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আলাদী হাটের পাট ব্যবসায়ী মো. গোলাম রব্বানী, ঠাকুরগাঁও রোডের মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী ও আবদুর রহমান বলেন, এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দামও বেশি। প্রতি মণ পাট ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা করে ক্রয় করছি। ইতোমধ্যে বাজারে পাট উঠতে শুরু করেছে এবং প্রতিমণ পাট আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকায় বা এর বেশিতেও বিক্রি হচ্ছে।

সদর উপজেলার আখানগর ভেলারহাট এলাকার কৃষক শমসের আলী, শাহজাহান ও আব্দুল লতিফ নামে একাধিক কৃষক জানান, একবিঘা জমিতে হালচাষ, সার বীজ সেচ নিড়ানি পাট কর্তন, ধোয়া ও শুকাতে ব্যায় হচ্ছে ৫-৭ হাজার টাকা। আর একবিঘা জমিতে পাট পাওয়া যাচ্ছে ১২-১৪ মণ।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, “এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। পাটের বাম্পার ও ভালোও আবাদ হয়েছে।”

সূত্র : বাসস।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!