• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রেনে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে কোরবানির পশু


জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২২, ০৮:৩৬ এএম
ট্রেনে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে কোরবানির পশু

সড়ক পথে ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে কম খরচে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে কোরবানির পশু। গরু-ছাগল পরিবহনের জন্য ক্যাটল স্পেশাল নামে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়ায় রেলওয়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন গরু ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ী এবং খামারী মালিকরা বলেছেন, এক দিকে যেমন সরকার রাজস্ব পাচ্ছে, অন্যদিকে স্বল্প খরচে সঠিক সময়ে গরু নিয়ে ঢাকায় যাওয়া যাচ্ছে। বুধবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় জামালপুরের ইসলামপুর থেকে ২৫টি ওয়াগনে ৪০০টি গরু নিয়ে ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন প্রথম ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এ ছাড়া রাতে আরেকটি ট্রেন ছেড়ে যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে। ট্রেনে পশু পরিবহনে খরচ কমার পাশাপাশি এড়ানো যাবে ভোগান্তি। এছাড়াও ট্রেনে পশু পরিবহনে থাকছে না দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

গরু ব্যবসায়ী আশরাফ আলী খান বলেন, “মেলাদিন বন্ধ থাকার পরে ৩ বছর ধইরে এই সেবা চালু হইছে। আমরা এই সেবায় খুব খুশি। আগে আঙ্গর খুব কষ্ট হইতো। একটা ট্রাক গরু ঢাকা নিয়ে গেলে খরচ পড়ত ১৮ থাইকে ২০ হাজার টাকা। এহন ৮ হাজার টাকায় ১৬ডা গরু এক ওযাগরে ভইরে আরামে নিয়ে যাওন যাইতাছে। এর চেয়ে শান্তি আর কী আছে?”

আরেক গরু ব্যবসায়ী মুন্নাফ বলেন, “আগে রাস্তা ঘাট দিয়ে গরু নিয়ে গেলে হাজার জায়গায় চান্দা দিওন লাগতো। এছাড়াও রাস্তার থেকনায় গরুর অবস্থা কাহিল হয়ে যাইতো। এহন এরম নাই। ট্রেনে গেলে কোনো ঝাকি লাগে না। গরু আরামে ঘুমায়ে ঘুমায়ে ঢাকা যায়তাছে গা।”

তবে এমন পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখার পাশাপাশি অবিক্রিত গরু ফিরিয়ে আনার জন্য ঢাকা থেকেও ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালুর দাবি জানিয়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা।

গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, “মনে করেন একটা ওয়াগনে আমরা ১৬ডা গরু নিয়ে ডাহা (ঢাকা) যাই। কারো কারো সব গরুইতো বেচা হয় না। এহন এই গরুগুলা ফিরত আনবের গেলে আবার ওই ট্রাক ভাড়া কইরেই আনা লাগে। তাইলে দেহা যায় যে ওই কষ্ট আবার করা লাগে।”

আরেক গরু ব্যবসায়ী মো. শুকুর আলী বলেন, “গতবার অনেক ব্যবসায়ী ট্রাকে কইরে তাগর গরু ফিরত আনছে। এহন ফিরার সময় সরকার যদি আরেকটা ট্রেন দিতো তাইলে আঙ্গর এই কষ্ট আর করা লাগতো না।”

ইসলামপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার শাহীন মিয়া জানান, ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনের ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। এমন পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। এছাড়াও রাজধানী ঢাকা থেকে ক্যাটল স্পেশালের ফিরতি ট্রেনের জন্য যাত্রীদের আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

তিনি আরও জানান, ইসলামপুর থেকে ক্যাটল স্পেশালের দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় রাত ১০টায়।

অপরদিকে জেলার হাটগুলোতে প্রচুর পরিমান গরু উঠছে। ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পশুর হাট। এ হাটে অন্যান্য বছরের তুলনায় অধিক মাত্রায় গবাদি পশু আমদানি হলেও বিক্রি কম। এ বছর হাটে নির্ধারিত স্থান পেরিয়ে বিভিন্ন অলি-গলিতে গাদাগাদি করে পশু বেচাকেনা শুরু হয়।

এছাড়াও জেলার সরিষাবাড়ি, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জের হাট বাজারে প্রচুর গরু উঠেছে। তবে আরও তিন দিন বাকী থাকায় পশু কিনতে সাহস পাচ্ছে না ক্রেতারা।
 

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!