এবার টিকার আওতায় আসছে সিলেটের স্কুল শিক্ষার্থীরা। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী এসব শিক্ষার্থীদের সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) থেকে টিকা প্রদান শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে সিলেট নগরীর ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে জেলার ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী টিকার আওতায় আসবে। সিলেট জেলা শিক্ষা অফিস ও সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সোমবার থেকে সিলেট নগরীর চারটি স্কুল কেন্দ্রে প্রতিদিন ৬০০ জন করে ২ হাজার ৪০০ জনকে টিকা প্রদান করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মতো এসব শিক্ষার্থীরাও ফাইজারের টিকা পাবে। সিলেটের যে সকল স্কুলে ফাইজারের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে সেগুলো হলো সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়।
সিলেট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ১২০ জন শিক্ষার্থীকে ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। ওই শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যায় না পড়ায় সারা দেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। নভেম্বরের শুরুতে ১ লাখ ৭০ হাজার স্কুল শিক্ষার্থীর তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) মাউশি সিলেট অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান খানের সভাপতিত্বে সিলেট নগরীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় কীভাবে শিক্ষার্থীরা টিকাগ্রহণ করবে সে ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ২৫ হাজার ৩৯৪ জন স্কুল শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেট নগরীর চারটি প্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে। টিকাগ্রহণে জন্মনিবন্ধন সনদের বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। চারটি স্কুলে একাধিক বুথের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।
সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সোমবার থেকে স্কুল শিক্ষার্থীদের ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। চারটি স্কুলে প্রতিদিন ৬০০ করে ২ হাজার ৪০০ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলোতে আমাদের লোকবল থাকবে। মহানগরীর ২৫ হাজার ৩৯৪ শিক্ষার্থীকে প্রথম ধাপে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।”
ডা. জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, “১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে জেলা শিক্ষা অফিস। আমরা ভ্যাকসিন সরবরাহ করবো।”
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ এস এম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “আমরা সিলেটের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের তথ্য মাউশিতে প্রেরণ করেছি। আগামী সোমবার থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সিলেট মহানগরীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্যান্য এলাকায়ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে।”
আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, “ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় দিতে হয়। বেশিরভাগ স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ নেই। আপাতত মহানগরীর চারটি স্কুলে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। অন্যান্য স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”