গ্রামীণ এলাকায় ইউনিব্লকের সড়ক 


বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১, ০৮:৪৬ পিএম
গ্রামীণ এলাকায় ইউনিব্লকের সড়ক 

টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বরগুনায় নির্মাণ করা হয়েছে জেলার প্রথম ইউনিব্লকের রাস্তা। ইটের বদলে ইউনিব্লক প্রযুক্তি দিয়ে গ্রামীণ এই জনপদে রাস্তা নির্মাণ করার পর নজর কেড়েছে সবার।

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া গ্রামের গ্রামীণ এ সড়কটি পরিবেশবান্ধব ও নান্দনিক হওয়ায় বদলে গেছে এই সড়ক সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ। ইটের ব্যবহার না করে প্রথমবারের মতো ইউনিব্লক দিয়ে নির্মিত এই সড়ক পছন্দ হয়েছে সবার।

বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া গ্রামে ৮০ লাখ ৮৮ হাজার ৭১২ টাকা ব্যয়ে ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দৃষ্টিনন্দন রাস্তাটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। কাজটি বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরগুনার মেসার্স রাশিদা এন্টারপ্রাইজ।

জানা যায়, অধিদপ্তরের উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করে বরগুনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ইউনিব্লকে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত অর্থবছরে পাইলট প্রকল্প হিসেবে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বরগুনা-বড়ইতলা থেকে থেকে ঢ্লুয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। তিন মিটার প্রস্থ রাস্তার উভয় পাশে ৬ ইঞ্চি করে কংক্রিটের কার্ভস্টোন রাস্তাকে আরও টেকসই করেছে।

আরও জানা যায়, সিমেন্ট, বালু আর পাথরে ৫০, ২৫, ১৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার এক-একটি ইউনিব্লকের চাপ ধারণক্ষমতা ইটের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। পাশে লাল রঙের ব্লক ব্যবহার করায় যানবাহন খুব সহজেই রাস্তার পরিমাপ অনুযায়ী চলতে পারছে। এতে বেড়েছে সৌন্দর্যও।

এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী ইব্রাহিম জানান, পিচঢালা রাস্তাটা দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। তাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত এ রাস্তা নতুন প্রযুক্তিতে ইউনিব্লকে নির্মাণ করায় আমরা খুব খুশি। মোটরসাইকেল স্লিপ করার ভয় নেই এ রাস্তায়। আবার দুপাশে খানিকটা ঢালু থাকায় বৃষ্টির পানিও রাস্তায় জমে থাকছে না।

কলতলা মধ্যপাড়ার কৃষক মোসলেম আলী হাওলাদার বলেন, “আবাদি শস্য নিয়ে হাটে যেতে আর কোনো চিন্তা নেই আমাদের। এখন সেই কষ্ট থেকে মুক্তি পেলাম।” ঠিকাদার মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, “রাস্তার নতুন প্রযুক্তির এ নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিনই উৎসুক জনতার ভিড় দেখেছি। ছিল জনতার স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতা। ইউনিব্লক কংক্রিট যেমন টেকসই তেমনি দৃষ্টিনন্দন। টেকসই উন্নয়নে কংক্রিটই ব্যবহার করা উত্তম।”

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, “পরিবেশবান্ধব এই রাস্তার নির্মাণ খরচ একটু বেশি হলেও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক কম এবং রাস্তার স্থায়িত্ব অনেক বেশি। এই রাস্তা যানবাহনের অধিক ভার বহনের উপযোগী। বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হলেও থাকবে নিরাপদ।”
 

Link copied!