কে আগে শারীরিক সম্পর্ক করবে এই নিয়ে দ্বন্দ্বে রাকিব হোসেনকে (১৫) হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া পিবিআই পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই জন গ্রেপ্তারের পর আদালতের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার (৫ জুন) বেলা ১১টায় পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের হিয়াতপুর এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে আহসান হাবীব ওরফে সজীব (২০), অপরজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোর।
রাকিব হোসেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের হিয়াতপুর এলাকার শামসুল ইসলাম শেখের ছেলে।
এর আগে গত শুক্রবার সকালে রাকিব হোসেনের লাশ উদ্ধার হয় বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার লাহিড়ীপাড়া গ্রামের এক ডোবা থেকে। পরদিন সোনাতলা থানায় রাকিবের বড়ভাই বেলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন৷
আকরামুল হোসেন জানান, নিহত রাকিব এবং গ্রেপ্তাররা বন্ধু ছিল। তারা ফ্রি ফায়ার গেমসে আসক্ত ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পর তদন্তে প্রথমে মাসুম বিল্লাহ নামের ১৫ বছরের এক কিশোরকে আটক করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যে গ্রেপ্তার করা হয় আহসান হাবীব সজীবকে।
সজিবের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, ঘটনার দিন অর্থাৎ ৩১ মে সজীব রাকিব হোসেনকে জানান যে, সজীব এক মেয়েকে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য সোনাতলার চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া পাথারের মাঝখানে আসতে বলেছেন। তারা সময়মতো সেই জায়গায় গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করবে। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সজীব নিহত রাকিবকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় এবং তাদের মাছুম বিল্লাহকেও সঙ্গে নেয়। এসময় রাকিব হাতে একটি লাঠি নিয়ে যাচ্ছিলেন।
পিবিআই পুলিশ সুপার আরও জানায়, সোনাতলা চমরগাছা লাহিড়ীপাড়া পাথারে পৌঁছার পর মেয়েটির সঙ্গে কে আগে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হবে এই নিয়ে রাকিব ও সজীবের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে রাকিবের হাতের লাঠি কেড়ে নিয়ে রাকিবের মাথায় ও ডান চোখের ওপর আঘাত করে সজীব। রাকিব লাঠির আঘাতে পড়ে গেলে সজীব পুনরায় তার মাথায় এলোপাথাড়িভাবে আঘাত করে। রাকিব অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে সজীব। পরে সজীব তার সহযোগী মাছুম বিল্লাহকে নিয়ে রাকিব হোসেনের লাশ হাত-পা ধরে টেনে হেঁচড়ে একটি ডোবায় ফেলে দেন এবং কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রেখে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়।