• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩০,

কাজিরহাট-আরিচা রুটে তীব্র যানজট


পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১, ০৯:১৪ এএম
কাজিরহাট-আরিচা রুটে তীব্র যানজট

ফেরি তুলে নেওয়া আর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পাবনার কাজিরহাট থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা রুটে কাজিরহাট ঘাট থেকে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে যানবাহন আটকে রয়েছে। 

শনিবার (২৮ আগস্ট) সকালে কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাহাবুবুর রহমান জানান, তীব্র স্রোত আর ফেরি সংকটে কাজিরহাট ঘাট থেকে আরিচা পার হতে যানবাহনগুলোকে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এই নৌপথে চলাচলকারী চারটি ফেরির মধ্যে একটি শিমুলিয়া ঘাটে নেওয়া হয়েছে। তিনটি ফেরি দিয়ে চলছিল পারাপার। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) কপতি নামের ফেরিটি বিকল হয়ে যায়। বর্তমানে গোলাম মওলা ও কলমিলতা নামের ছোট ছোট দুটি ফেরি দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে। যে ফেরি দুটি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ ১০০ যানবাহন পারাপার করা যায়।

এদিকে ফেরি সংকটের কারণে যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুই পাড়ে ৫ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামাল নামে বড় দুটি ফেরি এখান থেকে নিয়ে যাওয়ায় পারাপারে ধীরগতি আসছে। এর কারণে দুই পারে নদী পারাপারের অপেক্ষায় শত শত যানবাহন।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে কাজিরহাট ফেরিঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। অন্যদিকে অসহনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা। 

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক ড্রাইভার সুজন হোসেন বলেন, “৩ দিন আসছি। কাজিরহাট ঘাটে ফেরির সিরিয়াল পাইনি। অনেক কষ্টে দিন পার করছি।”

বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে আগত আরেকজন বাবুল আক্তার নামের ব্যবসায়ী বলেন, “দিনের পর দিন এখানে ট্রাক নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে দিনরাত কাটাতে হচ্ছে। এখানে নেই কোনো আবাসিক হোটেল, নেই কোনো বাথরুম। গোসল খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করতে পারি না।”

যশোর থেকে মালবোঝাই ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে কাজিরহাট ফেরিঘাটে পৌঁছান ট্রাকচালক আফজাল মিয়া। শনিবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে পারেননি। আফজাল মিয়া বলেন, “সরকারকে ঠিকমতো টোল দিলেও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন এই ফেরিঘাট বন্ধ থাকার পর চালু করা হলেও সরকারের রাজস্ব আদায় ঠিকই চলছে। চলছে নানা কৌশলে চাঁদাবাজি। কিন্তু ভুক্তভোগীদের জন্য যুগোপযোগী সেবার মান বাড়ানো হয়নি। বিষয়টি সরকারি কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়নি।

কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, “এই রুট এখন অনেকটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যার ফলে গাড়ির চাপ দিন দিন বাড়ছে। তবে ফেরি বাড়ানো হচ্ছে না। বেগম সুফিয়া এ বেগম রোকেয়া নামে দুটি ফেরি নিয়ে যাওয়ায় পারাপারে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফেরি না বাড়ানো পর্যন্ত যানজট নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না।”

Link copied!