কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে এবার অন্তত ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করছেন চাষিরা। লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন এখানকার লিচু চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফুল ফুলে ভরে উঠেছে লিচু গাছগুলো। বাগানে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এবার মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচুর বাম্পার ফলন আশা করছেন তারা। এদিকে লিচু বাগানকে ঘিরে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ চাষিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের প্রধান পেশা লিচু চাষ। লিচুর আয় থেকেই চলে পরিবারের ভরণ-পোষণ। মৌসুমের শুরুতে মুকুল আসার পরই চাষিদের কাছ থেকে গাছ কিনে নেন স্থানীয় ব্যাপারীরা। এরপর পরিচর্যা করে গাছের পাকা লিচু বিক্রি করেন তারা।
এ গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ১৫ হাজার লিচু গাছ আছে। চলতি মওসুমে এখান থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির আশা করছেন চাষিরা।
৩০ বছর ধরে লিচু চাষ করছেন মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের তৌহিদ মিয়া। এবারও তিনি সাড়ে ৪০০ গাছ কিনেছেন। তার বাগানে মুকুল এসেছে। যে কোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে বেশি মুকুল এসেছে এবার। তাই তিনি লিচুর বাম্পার ফলন আশা করছেন।
এদিকে বাগানের পাশে বক্স বসিয়ে মৌমাছি চাষ করে মধু সংগ্রহ করছেন খামারিরা। সেখান থেকে লিচুর সুস্বাদু বিশুদ্ধ মধু কিনতে ভিড় করছের অনেকে। বাগানে মৌমাছি চাষ করায় লিচুর ফলনও হয় বেশি।
মধু কিনতে আসা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রতি বছর মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচু কিনতে আসি। এবার মধু নিতে এসেছি। এ মধুর স্বাদ অনেক ভালো।”
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, “এ মধুর গন্ধ, ঘনত্ব ও স্বাদ অন্য যে কোনো মধুর চেয়ে ভালো। তাই এখান থেকে মধু কিনে ঢাকায় আত্মীয়দের বাসায় পাঠাবো।”
মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের মধু বিক্রেতা মো. ছফির উদ্দিন জানান, “কয়েক বছর ধরে লিচুর মধু সংগ্রহ করছি। তার খামারে ৫০টি বাক্স রয়েছে। এখান থেকে প্রতি মৌসুমে ৫০০ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম জানান, কিশোরগঞ্জসহ দেশ-বিদেশে মঙ্গলবাড়িয়া লিচুর কদর রয়েছে। এবার লিচুর ফলন বাড়াতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।