মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার প্রায় ৬০টি ইটভাটায় মাটির জোগান দিতে কাটা হচ্ছে তিন ফসলি জমি। ওই মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে ১০ চাকার ড্রামট্রাক। যন্ত্রদানব নামের এ ট্রাকের অবাধ চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ রাস্তা-ঘাটগুলো।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাত্রাতিরিক্ত লোড নিয়ে দিনে-রাতে ড্রাম ট্রাকগুলো অবাধে চলাচল করছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত এদের চলাচল ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। মাঝেমধ্যে থানা পুলিশ দু-চারটি আটক করলেও রফাদফার মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের দাবি, এ থানা এলাকায় ট্রাকগুলো না চালানোর শর্তে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক, বাস্তা-মানিকনগর সড়ক, গোবিন্দল-চারিগ্রাম সড়ক, ঋষিপাড়া-বলধারা সড়ক ও সিঙ্গাইর-মানিকনগর-সিরাজপুর সড়কসহ অভ্যন্তরীণ গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটগুলোতে ড্রামট্রাকের চলাচল ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দিনের পাশাপাশি সারা রাত ওভার লোড নিয়ে মাটি পরিবহনের কারণে সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে মাটি পড়ে যায়।
অতিরিক্ত লোডের কারণে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্নস্থান দেবে যাচ্ছে। জামির্ত্তা ইউনিয়নের হাতনি চকের ৪টি ইটভাটার সংযোগ সড়কে ট্রাক ওঠানামার কারণে মূল সড়কের অর্ধেকই ভেঙে গেছে। এসবের মূলে রয়েছে ইটভাটার মালিক ও মাটি সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আঞ্চলিক মহাসড়কটিতে সর্বোচ্চ ১০ টন পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করার কথা। সেখানে মাটি ও কয়লাবাহী ট্রাক-ড্রামট্রাকগুলো ৩০-৪০ টন লোড নিয়ে চলাচল করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মহাসড়কটি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ রুবাইয়াত জামান বলেন, “ভারী যানবাহনের চাকার বিটের ঘর্ষণে গ্রামীণ সড়কগুলোর কার্পেটিং দ্রুত ওঠে যায়। সবার সমন্বয়ে এগুলো বন্ধ করা জরুরি।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, “ড্রামট্রাকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। মাঝেমধ্যে আটক করা ড্রাম ট্রাকগুলো মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এসব বন্ধে উপজেলা প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিলে পুলিশি সহায়তা দেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাটিবাহী ড্রামট্রাক চলাচল বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। তারপরও বন্ধ না হলে পুলিশি সহায়তায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”